লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে বিনামূল্যের টাইফয়েড ভ্যাকসিন নিবন্ধনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামের আবদুল ওয়াহেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থী ও শিশু-কিশোরদের বিনামূল্যে টাইফয়েড ভ্যাকসিনের টিকা দিবে সরকার। টিকা নিতে প্রত্যেক শিশু ও কিশোর-কিশোরীকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অ্যাপসের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। এতে গত আগস্ট মাসে প্রধান শিক্ষকদের সভা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন সম্পন্ন করতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশনা দেন ইউএনও। পহেলা আগস্ট থেকে এই নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিনামূল্যে এই নিবন্ধন করার নির্দেশ দিলেও রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরলক্ষ্মী গ্রামের আবদুল ওয়াহেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে নিয়ে নিবন্ধন করাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শ্রেণি শিক্ষকরা এসব টাকা উত্তোলন করে প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুককের হাতে তুলে দেন। এদিকে অনলাইনে একজন শিশুর টিকার নিবন্ধন করে প্রিন্ট দিতে সর্বোচ্চ ৫ টাকা খরচ হয়। যা বিদ্যালয়ের বহন করার কথা। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে ৫০ টাকা করে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক তিনজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, ওই বিদ্যালয়ে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থীর নিবন্ধন করতে ১২ হাজার টাকা আদায় করছেন প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক। তাহলে বিদ্যালয়ে সরকার প্রদত্ত বছরে লাখ টাকা কোথায় যায়। সরকার থেকে টিআর কাবিখা সহ উন্নয়নের নামে নানা প্রকল্প এনে তা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে।
এদিকে বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষিকা সালমা সুলতানা রিমার স্বামী স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় স্কুলে একনায়কতন্ত্র কায়েম করে রেখেছেন রিমা। স্কুলে অনুপস্থিত থাকা সহ নানান ধরনের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এসব বিষয়ে অভিভাবকরা প্রতিবাদ করলে শিশুদের ফেল করার হুমকি দেন প্রধান শিক্ষক। তাই ভয়ে কেউ সরাসরি প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসকে টাকা দিতে হয়। এজন্য আমি ৫০ টাকা করে নিয়েছি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মু.সাইদুর রহমান স্বপন বলেন, বিনামূল্যে টিকা দিবে সরকার। এতে কোন টাকা পয়শা নেওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। আমার নাম বিক্রি করে টাকা নিলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।