বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে আজ রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) শুরু হচ্ছে এ দুর্গাপূজা। সকাল থেকেই ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দেবী দুর্গাকে বরণ করে নিতে চলছে নানা প্রস্তুতি। ধূপধুনো, পঞ্চপ্রদীপ আর ঢাকের বাদ্যের সুরে আসনে অধিষ্ঠিত হবেন দেবী দুর্গা। বোধনের ঘট স্থাপনের মাধ্যমেই শুরু হবে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা।
পঞ্জিকা অনুযায়ী আজ রোববার সকাল ১১টা ১১ মিনিট পর্যন্ত ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল শনিবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সন্ধ্যায় দেবীর বোধন সম্পন্ন হয়।
এদিকে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি আর ঢাকের বাদ্যের সুরে দেবীকে বরণ করার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ভক্তরা।
পুরাণ অনুসারে, দক্ষিণায়নে নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য এ বোধনের মাধ্যমে বন্দনা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সে অনুসারে মণ্ডপে-মন্দিরে পঞ্চমীতে সায়ংকাল তথা সন্ধ্যায় বন্দনা পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
সাধারণত দেবী দুর্গার বোধন হয় ষষ্ঠীর সন্ধ্যায়। কিন্তু কিছু বছর যেমন এবার পঞ্জিকার নিয়মে দেখা যাচ্ছে ষষ্ঠী তিথি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী রাত থেকে শুরু হচ্ছে বা পরের দিন বেশিক্ষণ নেই। তাই শাস্ত্রমতে যদি ষষ্ঠীর উপযুক্ত সন্ধিকাল না পাওয়া যায়, তবে পঞ্চমীর দিন সন্ধ্যায়ই বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস করতে হয়। অর্থাৎ এবার ষষ্ঠী তিথি পুরোপুরি সন্ধ্যায় মিলছে না। তাই নিয়ম মেনে পঞ্চমীর সন্ধ্যায় (শনিবার) দেবী দুর্গার বোধন করা হয়। তিথির কারণে এমনটা হচ্ছে।
শনিবার বোধন শেষে আজ দুর্গা দেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠী বিহিত পূজা। জানা গেছে, ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ‘মহাসপ্তমী’, ‘মহাঅষ্টমী’ ও ‘মহানবমী’ পূজা শেষে ২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ‘মহাদশমী’ পূজার মধ্য দিয়ে শেষ হবে আনুষ্ঠানিকতা। এরপর সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গোৎসবের পরিসমাপ্তি ঘটবে। এবার দেবী দুর্গার আগমন হবে গজে অর্থাৎ হাতির পিঠে চড়ে। আর দশমীতে দেবী মর্ত্যলোক ছাড়বেন দোলা বা পালকিতে চড়ে।
ঢাকায় এবার গতবারের তুলনায় সাতটি বেড়ে মোট ২৫৯টি মন্দির-মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর সারা দেশে মোট মন্দির-মণ্ডপের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩৫৫টি, যা গতবারের তুলনায় হাজারখানেকের বেশি।