চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে দারোয়ানের মারধর ও হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় গ্রামবাসী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
শনিবার (৩০ আগস্ট) মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।শিক্ষার্থীরা জানান, শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ৩২ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১২ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তারা আরও জানান, প্রথমে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছেন। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি টিম ক্যাম্পাসে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভুক্তভোগী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২৪-২৫ সেশনের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের কাছে একটি ভবনে ভাড়া থাকেন। গতকাল (শনিবার) রাতে তার কক্ষে যেতে দেরি হওয়ায় দারোয়ানের সঙ্গে কথা কাটাকাটির হঢ। একপর্যায়ে দারোয়ান ওই শিক্ষার্থীর ওপর চড়াও হন। এ সময় ২ নম্বর গেটে থাকা শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে ধরতে গেলে তিনি পালিয়ে যান। শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করলে স্থানীয় লোকজন ইটপাটকেল মারা শুরু করেন। তখন তাদের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সময় মতো বাসায় আসি। আজকেও দেরি করিনি। ১২টার মধ্যে চলে আসি। দারোয়ানকে দরজা খুলতে বলি। তবে তিনি দরজা খুলতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে জোরে ডাক দিলে তিনি অকথ্য ভাষায় কথা বলেন। আমি জবাব দিতে গেলে হঠাৎ আমার গলায় চড় মারেন। সঙ্গে সঙ্গে আমার রুমমেটরা নামলে তিনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং লাথি মারতে থাকেন। আমি আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে আমার রুমমেট ও আশপাশের স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন।’
ফরহাদ হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী জানান, রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় মাছ বাজারের সামনে একটি বাসায় এক ছাত্রীর ঢুকতে দেরি হওয়াকে কেন্দ্র করে দারোয়ানের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এর জেরে দারোয়ান ওই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালান। তাকে বিভাগের ছোট ভাইয়েরা বিষয়টি জানালে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে যান এবং দারোয়ানকে ধরতে গেলে সে পালিয়ে যান।
পরবর্তীতে একটু দূরে গিয়ে তাকে ধরে ফেলেন তারা। তখন এলাকাবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে দারোয়ানকে ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তারা আইন বিভাগের ২০-২১ সেশনের ইমতিয়াজকে রক্তাক্ত করে।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর এসেছে। আমি নিরাপত্তাকর্মী ও পুলিশকে জানিয়েছি। তারা ঘটনাস্থলে যাচ্ছে।’