বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংঘর্ষে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশমুখী রোহিঙ্গারা

  • রহমত উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার)   
  • ১৯ আগস্ট, ২০২৫ ২৩:৫৭

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও দেশটির সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ায় ফের নতুন করে বাংলাদেশমুখী হচ্ছে রোহিঙ্গারা। বুথিডংসহ বিভিন্ন এলাকার রোহিঙ্গারা দালালের সহায়তায় নাফ নদী ভেলায় পাড়ি দিয়ে টেকনাফ সীমান্তে প্রবেশ করছে। পরে তারা আশ্রয় নিচ্ছেন উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে।

এরই মধ্যে রোহিঙ্গা পারাপারে জড়িত স্থানীয় দুই দালালকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তাঁরা হলেন—টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়া এলাকার শামসুল আলম (৪৫) ও একই এলাকার মোহাম্মদ আলমগীর ওরফে জাবের (৩১)।

বিজিবি টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, “দালালদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশকারীদের প্রতিরোধ করা হচ্ছে।”

সরেজমিনে দেখা যায়, টেকনাফের জাদিমুড়া ও নাফ নদীর বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে বিজিবি সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। এক সদস্য বলেন, “কাল বিকেলে জাদিমুড়া পয়েন্ট দিয়ে কয়েকজন রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে। এরপর সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। এত বড় সীমান্ত একা পাহারা দেওয়া কঠিন।”

এদিকে, সোমবার বিকেলে নাফ নদী ভেলায় করে টেকনাফের জাদিমুড়া সীমান্তে প্রবেশের একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। সেখানে দেখা যায়, ভেজা কাপড়ে নারী-শিশু ও যুবকেরা নদী পার হয়ে দ্রুত সড়কে উঠে যাচ্ছে।

টেকনাফ জাদিমুড়ার স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ কাওছার উদ্দিন জানান, “নাফ নদীর ওপারে লালদিয়া ও পেরাংপু এলাকায় বহু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় আছে। গতকাল বিকেলেও কয়েকজন প্রবেশ করে গাড়ি যোগে উখিয়া চলে গেছে।”

রোহিঙ্গাদের ভেতরের পরিস্থিতি বর্ণনা করে টেকনাফ ২৭ নম্বর ক্যাম্পের মাঝি মো. নুর বলেন, “২০১৭ সালে আমি বাংলাদেশে আশ্রয় নিই। কিন্তু আমার পরিবারের ৯ জন এখনো রাখাইনের মাংগালা এলাকায় আটকা আছে। আরাকান আর্মি নিয়মিত তাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। প্রতিটি রোহিঙ্গা পরিবারকে জোর করে চাঁদা দিতে হচ্ছে। এমনকি তেল-মরিচসহ নিত্যপণ্য লুট করছে এবং জোরপূর্বক শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করছে। তাই জীবন বাঁচাতে রোহিঙ্গারা নতুন করে সীমান্ত পার হচ্ছে।”

টেকনাফ ক্যাম্প ২৬ ও ২৭-এর ইনচার্জ খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান বলেন, “কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে শুনেছি। তারা উখিয়ার দিকে চলে গেছে। মাঝিদের মাধ্যমে খবর মিলেছে, সীমান্তে আরও অনেক রোহিঙ্গা জড়ো রয়েছে।”

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, “বিজিবি আটক দুই দালালকে থানায় হস্তান্তর করেছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা দিয়ে কক্সবাজার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”

এদিকে সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় হোয়াইক্যং থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ৭১ কিলোমিটার জল-স্থলপথে বিজিবির টহল আরও জোরদার করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর