বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রামগতিতে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

  • এমরান হোসেন, কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি   
  • ১৯ আগস্ট, ২০২৫ ২১:১৫

লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার ইউনিয়নের চরআব্দুল্লাহ আল মাদ্রাসাতুল জামিয়াতুল ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আ ন ম আব্দুল হাকিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে মাদরাসায় তালা দিয়ে গত সাতদিন ধরে ক্লাস ও অফিস বর্জন কর্মসূচী পালন করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় গত সোমবার (১১ আগস্ট) থেকে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) মাদরাসায় কোন ক্লাস হয়নি।

এদিকে গত সোমবার ১৮ আগস্ট রামগতির ইউএনও’র কার্যালয় থেকে অধ্যক্ষের ৭০ লাখ টাকা দুর্নীতির তদন্তে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেয়া হয়।

শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন অধ্যক্ষ হিসেবে থাকার কারণে আব্দুল হাকিম একের পর এক মনগড়া সিদ্ধান্তে নানা অনিয়ম ও ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে মাদরাসার প্রায় ৭০ লাখ টাকা আত্মসাত করেন। ওই টাকার হিসাব চাওয়ায় তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হলে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামেন। তালা মেরে ৭ দিন ধরে ক্লাস বর্জন-মানববন্ধনসহ নানান কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা।

আবু বকর, গালাম কিবরিয়া ও যুবায়ের হোসেন নামের তিনজন মাদরাসার শিক্ষক জানান, অধ্যক্ষ আ.ন.ম. আব্দুল হাকিমের অসদাচরণ, শিক্ষক মিটিংগুলাতে কোন শিক্ষক তার মতের বিপরীতে মতামত দিলে মিটিং শেষে নিজের অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে ধমক দেওয়া, শিক্ষকদের বেতন স্কেল পরিবর্তন ও বিভিন্ন সরকারি সুবিধা দিতে বিধি লংঘন করা এবং এসব কাজের জন্য শিক্ষকদের নিকট থেকে জোরপূর্বক অর্থ আদায় করা, মাদ্রাসায় দাখিল ও আলিম পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপনের কথা বলে শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও মাদ্রাসার ফান্ড থেকে অধ্যক্ষ হাকিম কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন বলে জানান তারা।

তারা আরো জানান, শিক্ষক-কর্মচারীদের নিকট থেকে তাদর নাম, পদবি, ব্যাংক একাউন্ট সংশোধনের কথা বলে দুইবার প্রায় দুই লাখ টাকা নিয়েও কোন কাজ করেননি তিনি। মন্ত্রণালয়ের অডিটের কথা বলে শিক্ষকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের থেকে চার লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। মাদ্রাসার টাকায় কেনা বিভিন্ন আসবাবপত্র নিজের বাসায় নিয়ে যান এ অধ্যক্ষ।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ বেশিরভাগ সময়ে প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকেন। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রেজিষ্ট্রিশন বাবদ ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেওয়া সহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারা এই কর্মসূচি পালন করছেন।

এসব অভিযোগ এনে মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এডিসি জেনারেল বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তারা।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আ.ন.ম.আব্দুল হাকিম বলেন, মাদরাসার শিক্ষক আবু বকর, গালাম কিবরিয়া ও যুবায়ের হোসেনকে আয় ব্যায়ের হিসাবের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা মাদরাসার ৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই টাকা চাওয়ায় সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থী দিয়ে মাদরাসায় তালা মেরে দেন এবং গত সাতদিন ধরে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষাভ মিছিল ও মানববন্ধন করাচ্ছেন তারা।

রামগতির ইউএনও সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এডিসি সম্রাট খীসার বলেন, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়ে ইউএনও রামগতিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি দেখবেন।

এ বিভাগের আরো খবর