পরিত্যাক্ত অবস্থায় পরে আছে আ’লীগ আমলে নির্মিত রূপগঞ্জের মঠেরঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে কোটি টাকার ঘাট। নষ্ট হচ্ছে অযত্ন-অবহেলায়। ২০১৯ সালে এটা নির্মিত হলেও আজ অবধি এটি উদ্বোধন করা হয়নি। ঘাট এখন মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।স্থানীয়রা জানান, শীতলক্ষ্যার তীরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বেশ কয়েকটি ঘাট ব্যবহৃত হওয়ায় সরকারি এ ঘাটটি লোড-আনলোডে ব্যবহার করা হচ্ছে না। উপজেলা প্রশাসন ঘাটটি চালু করছে না। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ঘাটগুলো উচ্ছেদ করা হলে সরকারি এ ঘাটের চাহিদা বাড়বে। রাজস্ব পাবে সরকার।জানা যায়, মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মঠেরঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীপথের বিভিন্ন মালামাল লোড-আনলোডের জন্য ১ কোটি ৭৪ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৮ টাকা ব্যয়ে ঘাটটি নির্মাণ করা হয়। ঘাট নির্মাণের দরপত্র পায় মেসার্স আজমত এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি ঘাটের নির্মাণকাজ শেষ হয়। কিন্তু সাত বছর পেরিয়ে গেলেও ঘাটটি এখন পর্যন্ত কোন অদৃশ্য কারণে উদ্বোধন হয়নি।অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঘাটটি চালু না করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ঘাটের বেশ কয়েকটি অংশের সিমেন্টের পলেস্তারা উঠে গেছে। সিঁড়িগুলোর বিভিন্ন স্থান ভেঙে গেছে। এ ছাড়া ঘাটের যাত্রীছাউনিতে মাদক সেবীদেও আসর বসে। ঘাটের পাশে কয়েকটি ঝোপে রিকশাওয়ালা ও স্থানীয়রা মিলে জমিয়ে তোলেন মাদক ও জুয়ার আসর। এ আসর চলে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়েই।অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার রূপসী, মুড়াপাড়া, বানিয়াদি, হাটাবো, কাঞ্চনসহ কয়েকটি এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে তুলেছেন ঘাট (জেটি)। এসব ঘাটে প্রতিদিন মালবাহী জাহাজ নোঙ্গও করে মালামাল লোড -আনলোড করা হচ্ছে। এসব অবৈধ ঘাট থেকে প্রভাবশালীরা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আর অবৈধ ঘাটগুলোর কারণে সরকারি ঘাটটি ব্যবহার করা হচ্ছে না।নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়দের অনেকেই জানান, ঘাটটি চালু না হওয়ায় এখানে সাধারণ মানুষের আনাগোনা খুবই কম থাকে। ফলে ঘাটটি মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী ও জুয়াড়িদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ঘাটের পাশে কয়েকটি নির্জন স্থানে বসে রমরমা জুয়ার আসর। এলাকাটি সুনসান থাকায় এ ঘাট দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা জাহাজের চোরাই তেল লোড-আনলোড করেন।মাসুদ করিম নামে এক ব্যক্তি বলেন,ঘাটটি নির্মাণের পর ব্যবহার না হওয়ায় এখানে অপরাধীদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। ঘাটের এলাকাটি নীরব হওয়ায় সচরাচর লোকজন যায় না। ঘাটটি চালু হলে জায়গাটি লোকারণ্য থাকবে তখন আর মাদক ও জুয়ার আসর বসবে না।রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আক্তার হোসেন বলেন, ঘাটটি কি কারণে উদ্বোধন হয়নি সে বিষয়ে আমরা দেখছি খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, এটা যখন তৈরি হয়েছিল একটা ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে তৈরি হয়েছিল। এখান থেকে মানুষ পাড়াপাড় হবে ওপারে যাবে এবং ঘাঠের পাশে একটা ব্রিজ তৈরি হয়েছে শহীদ ফারহান সেতু নামে। মানুষ কিন্তু এখন সেতুতে পারাপার হচ্ছে। এই কারণেই একেবারে ব্যবহার নাই বললেই চলে। মাদকের যে বিষয়টা আমরা অলরেডি ঘাটটি সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য এলাকার মানুষ যাতে বিকালে এসে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। আমরা দেখব উদ্বোধন করা যায় কিনা। যদি কেউ ইচ্ছুক থাকে তাহলে টেন্ডারের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি ব্যবহার করতে পারবে
কোটি টাকার লোড আনলোড ঘাট এখন পরিত্যাক্ত
এ বিভাগের আরো খবর/p>