বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ কাল থেকে শুরু : পদক পাচ্ছেন ১৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২১ জুলাই, ২০২৫ ১৬:৪৯

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও জাতীয় মৎস্য পদক নীতিমালা অনুযায়ী মৎস্য খাতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৭টি ক্ষেত্রে মোট ১৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় মৎস্য পদক ২০২৫ প্রদান করা হবে। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রঞ্জের পদক দেয়া হবে। এই পদক মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রদান করবেন।

উপদেষ্টা সোমবার (২১ জুলাই) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে এসব কথা বলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, এ বছরের ২২-২৮ জুলাই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ একযোগে কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অর্থাৎ সমগ্র দেশব্যাপী উদ্যাপিত হতে যাচ্ছে। এবারের মৎস্য সপ্তাহকে জুলাই গণঅভ্যুথানে শহীদ ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে মৎস্য পদক প্রদান, বিভিন্ন ধরণের সচেতনতামূলক কার্যক্রম, র‍্যালি, আলোচনা, সেমিনার, কর্মশালা, প্রদর্শনী ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।

মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, দেশের আপামর জনগোষ্ঠীর নিরাপদ আমিষ ও পুষ্টির চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানি সম্প্রসারণ, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন তথা দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের অবদান অনস্বীকার্য। নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর, হাওর, বাওড় নিয়ে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয় আছে ৩৮.৬ লক্ষ হেক্টর, আর বদ্ধ জলাশয় আছে ৮.৫ লক্ষ হেক্টর এবং দক্ষিণের সুবিস্তৃত ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সামুদ্রিক জলসীমা আমাদের মৎস্য সম্পদের উৎস। মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা, টেকসই আহরণ ও উৎপাদনে সরকার কার্যকর, সময়োপযোগী, কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছে। তাই বাংলাদেশ আজ মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

তিনি বলেন, গবেষণালব্ধ, বিজ্ঞানভিত্তিক ও পরিবেশবান্ধব মৎস্য আহরণ, মৎস্য চাষ এবং সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে দেশীয় প্রজাতির মাছসহ অন্যান্য বিপন্ন বা বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মাছের অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা ও এর টেকসই ব্যবস্থাপনার দৃঢ় প্রত্যয়ে এবারের জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদ্যাপন করতে যাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, মাছের প্রজাতিগত ও কৌলিকতাত্ত্বিক (জেনেটিক) বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ, জলজ পরিবেশ ও ইকোসিস্টেম সংরক্ষণ ও দোশ মাছের নিরাপদ প্রজনন ও আবাসস্থল নিশ্চিতকরণ, জলাশয়ে টেকসই উৎপাদন এব্যাহত বাধ্য, পুনরুদ্ধার এবং সমাজভিত্তিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ এবং এর সাথে সম্পর্কিত মৎস্যজীবীর জীবন জীবিকা রক্ষার্থে এবং উন্নয়নে দেশের বিভিন্ন নদ-নদী ও অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে ৬৬৯টি অভয়াশ্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরও অভয়াশ্রম গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, “মৎস্য সপ্তাহ পালনের মধ্য দিয়ে আমরা মৎস্য খাতের অবদান তুলে ধরতে চাই। আপনারা জানেন, মৎস্য খাত দেশের মোট জিডিপি'র ২.৫৩ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপি'র ২২.২৬ শতাংশ। বছরে ৫০ লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়েছে। বারো লাখ নারীসহ প্রায় ২ কোটি অর্থাৎ মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ১২ শতাংশের অধিক মানুষের জীবন ও জীবিকা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৎস্য খাতের সাথে সম্পৃক্ত। আমিষের চাহিদা মেটানোর দিক থেকেও মাথাপিছু দৈনিক ৬০ গ্রাম গ্রহণের বিপরীতে মাছের প্রাপ্যতা ৬৭.৮০ গ্রামে উন্নীত হয়েছে। তবুও মাথপিছু গ্রহণ আরো বাড়াতে হবে”।

তিনি বলেন, মৎস্যসম্পদ রক্ষার্থে গৃহীত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু পদক্ষেপ প্রশংসিত হয়েছে। গবেষণালব্ধ তথ্যের ভিত্তিতে সামুদ্রিক মাছের সুষ্ঠু পরিবেশ ও উৎপাদনশীলতা পুন:প্রতিষ্ঠাকল্পে এ বছর ৬৫ দিনের পরিবর্তে ৫৮ দিন (১৫ এপ্রিল হতে ১১ জুন) সমুদ্রে সকল প্রকার নৌযান কর্তৃক মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ১৬ মার্চ ২০২৫ তারিখ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা, ২০২৩ এর প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মা ইলিশ ও জাটকাসহ অন্যান্য মাছ আহরণ নিষিদ্ধকালে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় প্রান্তিক প্রকৃত মৎস্যজীবীদের তালিকার ভিত্তিতে ভিজিএফ (চাল) প্রদান করা হচ্ছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মোট ১২ লক্ষ ৬৫ হাজার ৪৪৯টি জেলে পরিবারকে মোট ১ লক্ষ ০৪ হাজার ৬৬২.৬৭৫ মেট্রিক টন ভিজিএফ (চাল) বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সহায়তা দেয়া পরিবার প্রতি চালের পরিমাণ বাড়িয়ে ৫০ কেজি করার প্রস্তাব খাদ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। দাদনের দুষ্টচক্র থেকে জেলে ও মৎস্যজীবীদের মুক্ত করার লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো: তোফাজ্জেল হোসেন, অতিরিক্ত সচিব মো: ইমাম উদ্দীন কবীর, অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো: আবদুর রউফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

'অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি' এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ।

এ বিভাগের আরো খবর