বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খাবার নিতে গিয়ে নিহত আরও ৯৩ ফিলিস্তিনি, ‘বর্বরতা’ বন্ধের আহ্বান পোপের

  • ইউএনবি   
  • ২১ জুলাই, ২০২৫ ১৪:৪৭

গাজায় ত্রাণকেন্দ্রে খাবার নিতে গিয়ে ইসরায়েলি হামলায় আরও ৯৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি মধ্য গাজা থেকে নতুন করে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল, যেখানে বিপুলসংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। ইসরায়েলের এসব কার্যকলাপকে ‘বর্বরতা’ ও ‘নির্বিচারে ক্ষমতার প্রয়োগ’ আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পোপ লিও চতুর্দশ।

স্থানীয় সময় রবিবার (২০ জুলাই) গাজার উত্তরের জিকিম সীমান্ত দিয়ে জাতিসংঘের ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের সময় সেগুলোর জন্য অপেক্ষারত মানুষের ওপর ওই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

দ্য গার্ডিয়ানকে গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানিয়েছেন, গাজার দক্ষিণের রাফাহ শহরের কাছাকাছি একটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের কাছে আরও ৯ জন গুলিতে নিহত হয়েছেন। একইভাবে খান ইউনিসে আরেকটি ত্রাণকেন্দ্রের কাছে আরও ৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন ইসরায়েলি হামলায়।

এদিকে, ত্রাণকেন্দ্রের কাছে চালানো হামলার বিষয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হুমকি মনে করে উত্তর গাজায় জড়ো হওয়া মানুষের ওপর গুলি ছুড়েছে তারা। তবে নিহতের যে সংখ্যা গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তা তাদের প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

গাজার আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া জানান, রবিবার সকাল থেকে তারা ৪৮টি লাশ ও ১৫০ জন আহত ফিলিস্তিনিকে এই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। জিকিম সীমান্ত থেকে এসব হতাহতদের আনা হয়েছে বলে জানান তিনি।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মানবিক সহায়তা নিতে আসা মানুষের ওপর যেকোনো ধরনের হামলা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।

গাজায় বর্বরতা বন্ধের আহ্বান পোপের

ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলার খবর প্রকাশের আগেই অবিলম্বে গাজা যুদ্ধের বর্বরতা বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন পোপ লিও চতুর্দশ। রোমের ক্যাসেল গানদলফোতে অ্যাঞ্জেলাস প্রার্থনার শেষে তিনি এসব বলেন।

এ সময় গাজার একমাত্র ক্যাথলিক গির্জায় ইসরায়েলের চালানো হামলা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

পোপ বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই হামলা গাজার বেসামরিক জনগণ ও তাদের প্রার্থনাস্থলের ওপর চালানো হামলার একটি নতুন সংযোজন মাত্র।’

এ সময় মানবাধিকার আইন মেনে চলার পাশাপাশি বেসামরিক মানুষের সুরক্ষা, সামগ্রিকভাবে শাস্তি দেওয়া বন্ধ করা, নির্বিচারে বলপ্রয়োগ ও জোরপূর্বক জনগণকে উচ্ছেদ করার মতো কার্যকলাপ বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, ইসরায়েলে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় কার্যালয়ের (ওসিএইচএ) প্রধান জোনাথন হুইটলের আবাসনের অনুমতিপত্র (রেসিডেন্সি পারমিট) বাতিল করেছে তেল আবিব। জোনাথন গাজার মানবিক পরিস্থিতি বারবার নিন্দা জানিয়েছিলেন।

জোনাথন কোনো প্রমাণ ছাড়াই গাজা যুদ্ধ নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচার করছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার।

মাথা গোঁজার ঠাঁই নিয়ে দিশেহারা ফিলিস্তিনিরা

নতুন করে মধ্য গাজার বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অসহায় মানুষগুলো। ওই এলাকায় বহু বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাছাড়া সেখানকার খুব কম স্থানই রয়েছে যেখানে স্থল অভিযান চালায়নি ইসরায়েল। এ ছাড়া, ওই এলাকাগুলোতে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলো ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করে থাকে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহরের তিনটি আবাসিক ভবনে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এরপরই সেখান থেকে পালাতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা।

এক স্থানীয় বলেন, ‘তারা (ইসরায়েলি সেনাবাহিনী) লিফলেট ছুড়ে আমাদের সরে যেতে বলেছেন। কিন্তু আমরা জানি না কোথায় যাব, আমাদের জন্য কোনো আশ্রয় বা কিছুই নেই।’

এই নির্দেশ গাজা উপত্যকার মানুষগুলোর জীবন রক্ষায় যে সামান্য নাজুক কিছু অবলম্বন এখনো টিকে আছে, তার ওপর আরও একটি ভয়াবহ আঘাত বলে মন্তব্য করেছে ওসিএইচএ।

এদিকে, গাজায় খাদ্যসংকট ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ থাকার পরও তা গাজাবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে পারছে না বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনিদের জন্য কাজ করা সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ। ইসরায়েল ১০ লাখ শিশুসহ গাজার বেসামরিক মানুষদের ‘অনাহারে মারছে’ বলে অভিযোগ করেছে সংস্থাটি।

এসব অসহায় মানুষকে সহায়তা করতে অবরোধ তুলে নিয়ে ইউএনআরডব্লিউএ-কে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

হামাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গাজায় এই সংস্থাটির প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় ইসরায়েল। যদিও এই অভিযোগের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ তারা দেখায়নি।এই সংস্থাটিই ছিল গাজায় প্রধান ত্রাণ বিতরণকারী এবং ফিলিস্তিনিদের জন্য স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ মৌলিক সেবার অন্যতম প্রধান সরবরাহকারী। ইসরায়েলের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে সংস্থাটি।

তবে ইউএনআরডব্লিউএ’র ওপর থেকে এখনো নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়নি ইসরায়েল। পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় চালু করেছে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)।মে থেকে চালু হওয়া এই জিএইচএফ-এর ত্রাণকেন্দ্র থেকে খাবার নিতে গিয়ে এরই মধ্যে আট শতাধিক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর