বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যথাযোগ্য মর্যাদায় বুয়েটে অনুষ্ঠিত হলো জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫

  •    
  • ১৯ জুলাই, ২০২৫ ১৯:১৭

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়,বুয়েট-এ যথাযোগ্য মর্যাদায় অনুষ্ঠিত হয়েছে জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫। উক্ত অনুষ্ঠানমালা সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করার জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ‘‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫ আয়োজক কমিটি” শীর্ষক একটি কমিটি গঠন করা হয়।আয়োজক কমিটির উদ্যোগে ২দিন ব্যাপী (১৫-১৬জুলাই,২০২৫)সমন্বিত জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।

এ উপলক্ষ্যে বুধবার (১৬ জুলাই-২০২৫) বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন বুয়েটের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড.আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান ও আন্দোলনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন মাননীয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.আব্দুল হাসিব চৌধুরী। অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনে বুয়েটের ঘটনাবলীর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

উপাচার্য বলেন,‘‘জুলাই আন্দোলনের স্মৃতি শুধু স্মৃতি হিসেবেই থাকবে না আজ এখান থেকে সেই প্রতিজ্ঞা আমাদের করতে হবে। আমরা দেখেছি বর্বরতা;আমরা দেখেছি পিটিয়ে হত্যা করার মত ঘটনা।পুনর্জাগরণ এর জন্য যারা যুদ্ধ করেছে,নিহত হয়েছে,আহত হয়েছে তাদের উদ্দেশ্য সফল করার জন্য আমাদেরকে সকল প্রকার বর্বরতা এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে। আমরা চেয়েছিলাম নৈতিক সোসাইটি তৈরি করতে,সে পথেই আমাদের এগোতে হবে। তা নাহলে এই বলিদান,আত্নাহুতির কোন মূল্য থাকবে না। আমি শুধু মুখে মুখে বলবো আর সেটা কাজকর্মে প্রকাশিত হবে না,তাহলে কিন্তু কোন লাভ হবে না এবং উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে;আত্মাহুতি দেয়া বিফলে যাবে। আমরা দ্বিতীয় বার সুযোগ পেয়েছি,তৃতীয়বার আমাদের জন্য সে সুযোগ নাও আসতে পারে।”

বুয়েট শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,‘‘গত কয়েকদিন আগে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা করার পরে প্রতিবাদ করার জন্য বুয়েট এবং ঢাবি থেকে একটা মিছিল এর আয়োজন করা হয়েছিলো,যা যথাযথভাবে প্রতিবাদ করারই কাজ কিন্তু প্রতিবাদে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার কোনোভাবেই কাম্য নয়।প্রতিবাদ এর বিষয়ে আমরা অবশ্যই প্রতিবাদ করবো,কিন্তু সেটা নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে নয়।আশা করি আমরা আবার সেই ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠবো এবং আমাদের যে দায়িত্ব আমরা সেটা নিজ নিজ জায়গা থেকে পালন করবো। দেশের উন্নয়নে আমরা সকলের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবো। বুয়েটে অনুষ্ঠিত জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা ২০২৫ সফল হোক এই কামনা করছি।”

উপ-উপাচার্য বলেন,‘‘বিগত ৭৫ বছরে ৫টা গণঅভ্যুত্থানের ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশে ঘটে নাই। জনগণের জীবন যখন শুকনো পাতার মতো হয়ে যায়, অত্যাচার, নিপীড়ন,নির্যাতন শোষণ হয়,তখন তার ফলে একটি স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল তৈরি করে। সকল গণঅভ্যুত্থানে এটাই বারবার ঘটতে দেখা যায়। ১৪ জুলাই যখন কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের রাজাকারের নাতি-পুতি বলা হচ্ছিল তখন বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েরা। তখন বুঝতে পেরেছিলাম এখানে স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি হচ্ছে,দাবানল সৃষ্টি হতে পারে। ১৫ জুলাই যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলা করা হয় এবং ১৬ জুলাই আবু সাঈদকে অদম্য সাহসিকাতার সাথে দুই হাত সম্প্রসারিত করে পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়ে মৃত্যুবরণ করতে দেখি তখনই বুঝতে পেরেছিলাম বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। এই বাঁধ ভাঙার ঘটনা আমরা ১৯৭১ সালেও দেখেছি। ইতিহাস বলে কোন দেশের সরকার যখন সমগ্র জনগণকে শত্রু বিবেচনা করে তখন সেই সরকার আর টিকে থাকতে পারে না।

এই আন্দোলনের সময় বুয়েটের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে শিক্ষক,কর্মকর্তা,কর্মচারী,ছাত্র-ছাত্রী সকলের অংশগ্রহণে ৩০ জুলাই,২০২৪ তারিখে বুয়েটে সবচেয়ে বড় মিছিলের আয়োজন করা হয়।বুয়েট শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,সত্য ভাষণে যে শক্তি আছে,অশ্লীলতায় সেই শক্তি নেই। শক্তিহীন মানুষ তার অশ্লীল বাক্য দিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করতে চায়,বুয়েট শিক্ষার্থীরা এই কাজ করতে পারে না,পূনর্জাগরণে বুয়েট এই দেশকে অতীতেও পথ দেখিয়েছে ভবিষ্যতেও দেখাবে। তিনি বুয়েট শিক্ষার্থীদের সেভাবেই তৈরি হওয়ার পরামর্শ দেন।”

অনুষ্ঠানে বুয়েটের অনুষদের ডিন,শিক্ষক,শিক্ষার্থী,কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ আন্দোলনে তাদের স্মৃতিচারণ ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।

সবশেষে ছোট পরিসরে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

এ বিভাগের আরো খবর