‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রত্যাহারের দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো আজও সচিবালয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন কর্মচারীরা। মঙ্গলবার (২৭ মে) বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের পাশে বাদামতলায় জড়ো হয়ে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন।
সচিবালয়ে কর্মচারীদের আন্দোলন কর্মসূচির মধ্যে আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রশাসনের এই প্রাণকেন্দ্রে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদের সচিবালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত।
বিক্ষোভে অংশ না নেওয়া অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে অনেকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। ‘অবৈধ কালো আইন মানা হবে না’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন কর্মচারীরা।
বিক্ষোভ মিছিলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘অবৈধ কালো আইন, বাতিল কর করতে হবে’, ‘কর্মচারী মানে না, অবৈধ কালে আইন’, ‘মানি না মানবো না, অবৈধ কাল আইন’, ‘এক হও লড়াই কর, ১৮ লাখ কর্মচারী’, ‘সচিবালয়ের কর্মচারী, এক হও এক হও’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’- এ ধরনের বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
অধ্যাদেশে যা আছে
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের চারটি বিষয়কে অপরাধের আওতাভুক্ত করা হয়। সেগুলো হলো, সরকারি কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের শামিল বা যা অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে, অন্যান্য কর্মচারীর সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন, অন্য যেকোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন এবং যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তাঁর কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন, তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন।
অধ্যাদেশে এসব অপরাধের শাস্তি হিসেবে বলা হয়েছে, দোষী কর্মচারীকে নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে নামিয়ে দেওয়া, চাকরি থেকে অপসারণ বা চাকরি থেকে বরখাস্ত করার দণ্ড দেওয়া যাবে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। আর অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে কেন দণ্ড আরোপ করা হবে না, সে বিষয়ে আরও সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। তার ভিত্তিতে দণ্ড আরোপ করা যাবে।
এভাবে দণ্ড আরোপ করা হলে দোষী কর্মচারী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। তবে রাষ্ট্রপতির দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না। আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করা যাবে।
বর্তমানে দেশে ১৫ লাখের মতো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। আইন অনুযায়ী সবাই কর্মচারী।