বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আ.লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের পর যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে : প্রধান উপদেষ্টা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৬ মে, ২০২৫ ১২:৫৯

* ভারতীয় আধিপত্যবাদ নিয়ে সংকটের কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা: মান্না * আগামী বছরের জুনের পর এক দিনও দায়িত্বে থাকবেন না ড. ইউনূস : প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পর আরেকটা যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গতকাল দেশের বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে প্রেস সচিব বলেন, ‘তিনি বলেছেন যে, আমরা বড় যুদ্ধাবস্থার ভেতরে আছি। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পরে ডিস্টাবিলাইজ করার জন্য যত রকমভাবে পারে চেষ্টা করছে। এটা থেকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। বিভাজন থেকে আমাদের উদ্ধার পেতে হবে। ঐকমত্য থাকতে হবে। আত্মমর্যাদাপূর্ণ জাতি হিসেবে আমরা যতটুকু দাঁড়াতে পেরেছি, এটা যেন সামনের দিকে যায়।’

শফিকুল আলম বলেন, ‘সবাই একসঙ্গে বসাতে তিনি বলেছেন যে, তিনি মনে সাহস পেয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে আমি অপরাধী অনুভব করব। অভ্যুত্থানের কারণে মহাসুযোগ পেয়েছি ধ্বংস হয়ে যাওয়া দেশকে টেনে আনার।’

‘প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেছেন, যারা এই কনসপারেসি করছে, তাদের ইন্টেনশন হচ্ছে আমরা যেন আবার গোলামিতে ফেরত যাই। আমি যতদিন আছি দেশের কোনো অনিষ্ট হবে এমন কোনো কাজ হবে না নিশ্চিত থাকেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলেছেন যে জুন ৩০-এর পর নির্বাচন যাবে না। জুন মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে নির্বাচন। যখন সময় আসবে তিনি রোডম্যাপ বা শিডিউল ঘোষণা করবেন। প্রফেসর ইউনূস জানিয়েছেন তিনি জুন মাসের ৩০ তারিখের পর এক দিনও থাকবেন না।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের সরকারের তিনটা কাজ। একটা সংস্কার, আরেকটা বিচার, আরেকটা নির্বাচন। আমরা যখন পূর্ণ সংস্কার করতে পারব, দেখবেন ইলেকশনের বিষয়েও আমরা মানুষের আস্থা পাব।’

এর আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গতকাল কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে পৃথকভাবে দুটি বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা আগামীতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছেন।

প্রথম ধাপে বৈঠকে অংশ নেন এলডিপির সভাপতি অলি আহমেদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সেক্রেটারি সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির প্রধান মুজিবুর রহমান মঞ্জু ও সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমসহ বেশ কয়েকজন নেতা।

বৈঠকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও রাজনৈতিক সংস্কারসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

দ্বিতীয় দফার বৈঠকে মাওলানা সাদিকুর রহমান, মাওলানা রেজাউল করিম, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, নুরুল হক নূর, মাওলানা মুসা বিন ইজহার এবং মুফতি মাওলানা শাখাওয়াত হোসেন রাজী উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে যমুনা থেকে বের হয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের কারণে দেশ বড় সংকটের মধ্যে রয়েছে। এ জন্য পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার বলে প্রধান উপদেষ্টা মনে করছেন।’

মান্না বলেন, ‘তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) আলোচনা শুরু করেছেন এই কথা বলে যে আমরা অনেক বড় সংকটের মধ্যে আছি। এই সংকট বলতে উনি ভারতীয় আধিপত্যবাদের ষড়যন্ত্রের কথা বলেছেন। ভারতীয় আধিপত্যবাদ আমাদের এই পরিবর্তনকে একেবারেই স্বীকার করতে চায় না। পারলে আমাদের এক দিনে ধ্বংস করে দিতে চায় এবং সেই জন্য যা যা করবার দরকার, সব তারা করছে। এই ছিল তার কথা।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি জানান, বৈঠকে তারা প্রধান উপদেষ্টাকে রাজনীতি সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য বলেছেন। সেই সঙ্গে নির্বাচনের তারিখ, নির্বাচনের রূপরেখা এবং কীভাবে নির্বাচন করতে চান, তা প্রধান উপদেষ্টার বলা উচিত বলেও তাকে জানিয়েছেন।

মান্না বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা তাদের স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, কম সংস্কার হলে ডিসেম্বরে আর বেশি সংস্কার হলে জুনে নির্বাচন হবে। এ সময় প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগপত্রে লিখে দিতে চেয়েছেন কোনোভাবেই নির্বাচন জুনের পরে যাবে না।’

দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য দিন দিন দুর্বল হচ্ছে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, এ কারণে প্রধান উপদেষ্টা চিন্তিত ও হতাশ। তিনি আরও বলেন, তারা প্রধান উপদেষ্টাকে আশ্বস্ত করেছেন যে জাতীয় ইস্যুগুলোতে তারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। তাতে প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত হয়েছেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তাদের জানিয়েছেন, সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকেও তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। সে জন্যই তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে অনেক কিছু হয়েছে তাদের (উপদেষ্টাদের) নিজেদের মধ্যে, সেগুলো একটা বিস্তারিত কাহিনি বললেন... কী রকম করে বাকিরা তাকে আটকেছেন, পদত্যাগপত্র লিখতে দেননি। লিখলেও সেটা পাঠাতে দেননি এবং তাকে ধরে রেখেছেন।’

অন্যদিকে বৈঠক থেকে বেরিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টাকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না, মানসিক টর্চার করা হচ্ছে, এটা আমরা অনুভব করছি। তাই আমরা তাকে (প্রধান উপদেষ্টাকে) বলেছি, জিতলে একসঙ্গে, হারলেও একসঙ্গে, মাঝখানে রণে ভঙ্গ দেওয়ার চিন্তা বাদ দিতে বলেছি।’

ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন ও ভোটের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও বিচারের দাবি জানানো হয়।

এর আগে শনিবার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা পৃথকভাবে ইউনুসের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।

এ বিভাগের আরো খবর