স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আমাদের এখানে হিন্দু-মুসলিম কোনো ভেদাভেদ নেই। আমরা এখানে সবাই বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশি হিসেবেই আমরা সবাই এখানে আছি। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সবসময় আছে। বাংলাদেশের মতো এত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কোথাও নেই। আশপাশে দেখবেন কীভাবে কী ঘটছে। আমাদের দেশে সবাই একসঙ্গে কাজ করছেন।
গতকাল শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাঅষ্টমী পুণ্য স্নানোৎসব পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ৮ মিনিট থেকে স্নান উৎসবের লগ্ন শুরু হয়। যা শনিবার ৫ এপ্রিল রাত ১২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত চলবে।
পুণ্যার্থীদের উদ্দেশে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এখানকার নিরাপত্তায় যারা জড়িত আছে তাদের আপনারা ধন্যবাদ দেবেন। তারা কিন্তু এবার খুব ভালোভাবে কাজ করেছে। তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে ভালো খবর হচ্ছে অন্যান্যবারের চেয়ে এবার নদীর পানি সবচেয়ে ভালো ছিল। এবার পুণ্যার্থীদের সংখ্যাও অনেক বেশি। আপনার সবাই ধৈর্য ধরে পুণ্যস্নান শেষ করবেন।
দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নির্বিঘ্নে, নিরাপদে বসবাস করছে উল্লেখ করে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে একটা শ্রেণি ফায়দা লোটার জন্য অনেক মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এ সময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মিথ্যা সংবাদকে সত্য সংবাদ দিয়ে কাউন্টার করতে হবে। আপনারা সত্য ও সঠিক সংবাদ প্রকাশ করুন। সঠিক সংবাদ প্রকাশ করলে কেউ যদি মিথ্যা সংবাদ করে তা স্বাভাবিকভাবে বাতিল হয়ে যাবে। অনেকে মিথ্যা সংবাদ দিয়ে বেশি পয়সা আয় করে। আমাদের দেশের মিডিয়ার সঙ্গে অনেক বিদেশি মিডিয়ার ভালো সম্পর্ক রয়েছে, তারাও অনেক সময় মিথ্যা সংবাদ দিতে চায়। কিন্তু আপনারা সত্যি সংবাদ দিয়ে মিথ্যাকে কাউন্টার করবেন। এতে করে তাদের মুখে চুনকালি পড়বে।
সরকারের অবস্থান থেকে তিনি বলেন, ‘আমাদের যদি কোনো ভুল থাকে সেটা আপনারা প্রকাশ করেন। তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু কোনো মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ দেবেন না। সত্যি সংবাদ দেবেন।’
লাঙ্গলবন্দ এলাকাকে পর্যটন কেন্দ্র করা হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করে এই স্থানকে কীভাবে পর্যটন কেন্দ্র করা যায় সে বিষয়ে আমরা দেখব। পর্যটনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এটি একটা পুণ্যভূমি। এই জায়গাটা ধর্মীয় জায়গা। এই জায়গাটা পর্যটন কেন্দ্র করতে গিয়ে যেন ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য যেন নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ধর্মের বিষয়টা সবচেয়ে বড়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ আয়োজন ভবিষ্যতে আরও যেন ভালোভাবে হয় এ জন্য সবসময় আমাদের চেষ্টা থাকবে। সব সময়ই নদীর পানিও যেন ভালো থাকে সেজন্য আমরা কাজ করব। নদীর পানিটা ভালো রাখা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, স্নানোৎসব উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সংকর সাহা ও জয় কে রায় চৌধুরী বাপ্পিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।