বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে থাকা আলামত জব্দের অনুমতি পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)।
ট্রাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট আমলি আদালতের বিচারক রাশেদ হোসাইন বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
আইসিটির তদন্তকারী কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন এ আবেদন করেন। তার পক্ষে শুনানি করেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার এসএম মইনুল করিম।
ব্যারিস্টার মইনুল করিম স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রংপুরে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
‘মামলার তদন্তের স্বার্থে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের জিম্মায় আগের মামলা দুটির তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে আলামতগুলো আছে, সেগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় জব্দের অনুমতি দেওয়ার জন্য আবেদন জানান। আদালত শুনানি শেষে তার আবেদন মঞ্জুর করেছেন।’
তিনি জানান, এর আগে এ হত্যা মামলায় রংপুরে এসে সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল। আলামত জব্দের অনুমতির মাধ্যমে মামলার তদন্তে আরেক ধাপ অগ্রগতি হলো। প্রয়োজনে জব্দকৃত আলামতের ফরেনসিক পরীক্ষা করে শিগগিরই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা সম্ভব হবে।
আবু সাঈদ হত্যা মামলার বাদীপক্ষের প্যানেল আইনজীবী রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, শুনানিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আলামত জব্দের আবেদনের পক্ষে তারা বলেছেন। এর মাধ্যমে এ মামলার তদন্ত গতি পাবে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরদিন তাজহাট থানায় মামলা করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বিভূতি ভূষণ রায়। এরপর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালানোর পরে ১৮ আগস্ট পুলিশের সাবেক আইজিপিসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ এবং ৩০ থেকে ৩৫ জনের অজ্ঞাতনামা আসামির কথা উল্লেখ করে মামলা করেন শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই মো. রমজান আলী।
পরে তিনি সম্পূরক এজাহারে আরও সাতজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেন।
মামলা দুটির তদন্ত করছিল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) রংপুরের পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন। কিন্তু মামলার তদন্তে অগ্রগতি না থাকায় বাদী অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন।