বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যৌন নিপীড়ন: টেকনাফের সেই শিক্ষক বরখাস্ত

  • প্রতিনিধি, টেকনাফ (কক্সবাজার)   
  • ১৩ মার্চ, ২০২৫ ১৫:২১

জেলা শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেওয়া হয়।

ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বরখাস্ত করা হয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফের কচুবনিয়া এমপি বদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আকবর সাজ্জাদকে।

জেলা শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেওয়া হয়।

জেলা শিক্ষা অফিসারের চিঠিতে বলা হয়, ‘টেকনাফ উপজেলার কচুবনিয়া এমপি বদি সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলী আকবর সাজ্জাদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। আজকে থেকে এ আদেশ কার্যকর করা হবে।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শাহীন মিয়া বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আলী আকবর সাজ্জাদ কর্তৃক উক্ত বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে যৌন হয়রানির করার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জাতীয় গণমাধ্যম নিউজবাংলা ও দৈনিক বাংলাকে ধন্যবাদ জানাই সত্য নিউজ করার জন্য।এ ছাড়া যেকোনো স্কুলে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য শিক্ষকদের সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলার নতুন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান আরজু বলেন, ‘এমপি বদি কচুবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলী আকবর সাজ্জাদকে বরখাস্ত করার জন্য জেলা শিক্ষা অফিসারের চিঠি হাতে পেয়েছি। ফলে তিনি এখন আর বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নন। এ জন্য প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।’

এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এসব অভিযোগ সামনে আসার পরপরই কর্তৃপক্ষ আমলে নিলে এ রকম ঘটনা ঘটত না। এসব বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানালে কিন্তু অদৃশ্য কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এর ফলে তিনি আরও সাহস পেয়ে যান। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

গত বছরের ২৫ নভেম্বর ‘টেকনাফে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে নিউজবাংলায় সংবাদ প্রকাশ হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ নভেম্বর যৌন হয়রানির অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়।

কক্সবাজার জেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. সাজ্জাদকে আহ্বায়ক করে এক সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি সরেজমিনে গিয়ে গোপন ও প্রকাশ্যে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও অভিযোগকারী তিন ছাত্রী ও অভিভাবকের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

শিক্ষার্থীদের একজন বলে, “স্যার আমাদের বলেন, ‘তোমরা স্কুলে আসার সময় দুই ঘণ্টা আগে আসবা।’ খালি ক্লাসরুমে প্রবেশ করায় দরজা বন্ধ করে আমাদের সবসময় যৌন হয়রানির করত। স্যার আমাদের বলত যে, ‘তোমাদের পরীক্ষায় ভালো নম্বর দিয়ে পাস করিয়ে দিব এবং তোমরা প্রতিজ্ঞা করবা, তোমাদের সঙ্গে যা ঘটছে জীবনেও তা কারও কাছে কিছু বলা যাবে না।’ পরে এগুলো বলে আমাদের স্পর্শকাতর স্থানে হাতে হাত দেয়।”

এক ছাত্রীর অভিভাবক বলেন, ‘আমার মেয়ে স্কুলে যায় না। মেয়ের মার থেকে জানতে চাইলাম কেন হঠাৎ স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিছে। বিষয়টি মাও জানে না। ১০ বছরের ছোট্ট মেয়ে। তাই ভয়ে আমাদের জানায়নি, কিন্তু ওদের বান্ধবীরা একদিন মেয়ের মাকে বিষয়টি অবগত করল যে, আপনার মেয়েকে হেড স্যার যৌন হয়রানির করে আসছে। তাই উনি স্কুলে যাচ্ছে না।

‘আমি বিষয়টি স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের জানাই। তারা আমাকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাতে বলেন। পরে আমি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করি।’

এ বিভাগের আরো খবর