মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আলু পরিবহন কাজের কর্তৃত্ব ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় কেউ আহত না হলেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। ঘটনার পর আলু পরিবহনকাজ বন্ধ রয়েছে।
উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামের ভাটি চকে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল রাতে আনুমানিক ২০টি গুলি ছোড়া হয়। এ ছাড়া আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পাঁচ থেক ছয়টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইমামপুর ইউনিয়নের করিমখাঁ গ্রামের রমজান গ্রুপের সঙ্গে হোগলাকান্দির লালু-সৈকত গ্রুপের বিরোধ ছিল। রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘদিন রমজান এলাকার বাইরে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি এলাকায় ফিরে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছিলেন।
তারা জানান, চলমান আলু উত্তোলন মৌসুমে ট্রাক্টরে আলু পরিবহন কাজের কর্তৃত্ব নিয়ে সম্প্রতি দ্বন্দ্বে জড়ায় উভয় পক্ষ। অন্যান্য বছরের মতো এবারও লালু-সৈকত গ্রুপের লোকজন একচ্ছত্রভাবে ট্রাক্টরে আলু পরিবহনের কাজ করতে চাইলে সেখানে বাধা দেন রমজান। শুক্রবার রাতে হোগলাকান্দি গ্রাম সংলগ্ন ভাটি চকে কৃষকের জমি থেকে লালু-সৈকত গ্রুপের লোকজন তাদের ট্রাক্টরে আলু বস্তা লোড করার সময় সেখানে বাধা দেন রমজান ও তার গ্রুপের লোকজন।
ওই সময় আতঙ্ক তৈরি করতে প্রথমে প্রায় ৫-৬টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে রাত ১২টা পর্যন্ত গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় কৃষক আবদুল আলী বলেন, ‘এই চকে আলু পরিবহনের কাজে অন্য কোনো লোক আসতে পারে না। শুধু একটি পক্ষই দীর্ঘদিন ধরে এ কাজটি করছে। স্বাভাবিকের চাইতে অন্তত বস্তাপ্রতি ১৫ টাকা বেশি দিয়ে আমাদের আলু পরিবহনের কাজটি করতে হয়।
‘এ কাজে অনেক লাভ হয় বিধায় আলু পরিবহনের কর্তৃত্ব নিয়ে গতকাল রাতে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। এখন আপাতত আলু পরিবহনের কাজ বন্ধ। দ্রুত অবস্থার উন্নতি না ঘটলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
স্থানীয় কৃষক মোকাররম হোসেন বলেন, ‘উভয় পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে আলু পরিবহনের কাজ আপাতত বন্ধ। ভয়ে কেউ ট্রাক্টর নিয়ে আলু পরিবহনের কাজ করতে আসছে না। আমাদের উত্তোলিত আলু জমিতে পড়ে আছে।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে রমজান এবং লালুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘শনিবার সকালে আমি খবরটি পেয়েছি। জড়িতদের ধরতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
‘কৃষক যাতে নির্বিঘ্নে তাদের উত্তোলিত আলু পরিবহন করতে পারে, আমরা সেই ব্যবস্থা করছি।’