বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিনা লাভে ইফতারসামগ্রী বিক্রি করছেন চাঁদপুরের শাহ আলম

  • ইউএনবি   
  • ১ মার্চ, ২০২৫ ১৩:৪৬

শাহ আলম বলেন, ‘নিজ বাড়ির পাশে কোনো লাভ ছাড়াই কেনা দামেই পবিত্র মাহে রমজানের আটটি ইফতারসামগ্রী বিক্রি করছি। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে মুড়ি, ছোলা, খেসারির ডাল, বেসন, চিড়া, চিনি, খেজুর ও সয়াবিন তেল।’

দেশে রমজান মাস এলে বাজারে হু হু করে বেড়ে যায় খাদ্যপণ্যের দাম। এমন বাস্তবতায় ভিন্ন চিত্র সামনে এনেছেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের মুদি দোকানি শাহ আলম।

রমজান উপলক্ষে ইফতারসামগ্রীর দাম কমিয়ে দিয়েছেন শাহ আলম। লাভ ছাড়াই পণ্য বিক্রি করছেন তিনি।

ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মধ্য চরকুমিরা গ্রামে শাহ আলমের এ মুদি দোকান। পাশেই নিজ বাড়ি।

তিনি জানান, গেল দুই বছর রমজানে কেজিতে এক টাকা লাভে ইফতারসামগ্রী বিক্রয় করেন। অবশ্য এবারও কেজিতে এক টাকা লাভে উপজেলার ভাটিয়ালপুর এলাকায় তার নিজের অন্য একটি দোকানে ইফতারের ৮ রকমের পণ্যসামগ্রী বিক্রি করছেন তিনি। সেটা তার ভাই ও বোন দেখাশোনা করছেন। তবে আরেক দোকানে লাভ ছাড়াই বিক্রি করছেন পণ্য।

শাহ আলম বলেন, ‘নিজ বাড়ির পাশে কোনো লাভ ছাড়াই কেনা দামেই পবিত্র মাহে রমজানের আটটি ইফতারসামগ্রী বিক্রি করছি। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে মুড়ি, ছোলা, খেসারির ডাল, বেসন, চিড়া, চিনি, খেজুর ও সয়াবিন তেল।’

শাহ আলমের দোকানে মূল্য তালিকা সাঁটানো রয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও তার দোকান পরিদর্শন করেছেন।

এ দোকানি ইউএনবিকে বলেন, ‘বছরের ১১ মাসই তো ব্যবসা করি। এই মাসে কোনো ব্যবসা (লাভ) করব না। পাশে আমার আরেকটি মুদির দোকান রয়েছে। গরিব, মেহনতি মানুষের জন্য কিছু একটা করার জন্য এ বছর রমজানে ক্রয়মূল্যেই রোজাদারের জন্য আটটি খাদ্যপণ্যসামগ্রী বিক্রয় করার সিদ্বান্ত নিয়েছি। এখন থেকেই শুরু করছি এসব পণ্য বিক্রি।’

অন্যান্য বছর রমজানে মাসে প্রায় ১০ লাখ টাকা বিক্রয় হলেও এবার রমজান মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল বিক্রয় করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ব্যবসায়ী শাহ আলম।

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার রমজানের মালপত্র বিক্রির অর্ডার পেয়েছি এ এলাকার লোকজন ও প্রবাসী ভাইদের কাছ থেকে।’

তার দোকান পরিদর্শন করে দেখা যায়, শাহ আলম, তার ভাতিজা সাকিবসহ (১৯) এসব পণ্য সামগ্রী প্যাক করছেন। দোকানে মালামালে পূর্ণ।

রমজানে দূরের বাজারে না গিয়ে বাড়ির পাশে শাহ আলমের মুদি দোকান থেকে ক্রয়মূল্যে ইফতারসামগ্রী কিনতে পেরে আশপাশের ক্রেতারা খুশি বলে জানান অটোচালক আরজু মিয়া (৪০), আইয়ুব আলী বেপারি (৫০), অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী আবদুল খালেক (৭৭), বেলায়েত হোসেন (৫০), ইলেকট্রিক মিস্ত্রি সাকিব বেপারি (১৮) ও আবুল বেপারি (৬০)।

তারা বলছেন, শাহ আলমের দোকান থেকে পণ্য ক্রয় করলে সুবিধা। দূরের বাজারে গিয়ে বিভিন্ন দোকানে দাম যাচাই-বাছাই করতে ঘুরতে হয় না।

শাহ আলম এসব পণ্য প্যাক করে মালামাল রিক্সা-ভ্যানে করে বাড়িতে বাড়িতে বাড়িতেও পাঠিয়ে দেন বলে জানান একজন গৃহিণী ও তার বাবা।

গেল দুই বছর ১ টাকা লাভে রমজানের পণ্য বিক্রয় করে ব্যাপক সাড়া পান শাহ আলম। গত বছর সরকার তাকে পুরস্কৃতও করে।

পাশের মুদি দোকানদার বেলায়েত হোসেন বেপারিসহ কয়েকজন শাহ আলমের এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন।

এদিকে রমজান উপলক্ষে বিনা লাভে ক্রয়মূল্যে ইফতারসামগ্রী বিক্রয় করায় শাহ আলমকে অভিনন্দন জানিয়েছে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

সম্প্রতি তার দোকানে গিয়ে যেকোনো ব্যপারে শাহ আলমকে সহযোগিতার হাত বাড়ানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলার সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল ইমরান।

এ বিভাগের আরো খবর