ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির শুক্রবার গভীর রাতের চিঠির মাধ্যমে স্থগিত করা হয়েছে বালিয়াডাঙ্গীর দুওসুও ইউনিয়নের সম্মেলন।
এতে ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতা-কর্মীদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের হরতাল শনিবার বেলা সোয়া ১১টার পর প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এর আগে সকালে হরতালের বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ড. টি এম মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী শনিবার সকাল থেকে ইউনিয়ন সম্মেলনের ভোট গ্রহণের কথা থাকলেও জেলা বিএনপির নেতারা আকস্মিকভাবে শুক্রবার মধ্যরাতে চিঠি দিয়ে সম্মেলন স্থগিতের নির্দেশ দেন। জেলা বিএনপির এমন হঠকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হন তৃণমূল বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তারা হরতালের ডাক দেন।
‘তবে জেলা বিএনপির এমন সিদ্ধান্তে আমিও খুশি না। কারণ এমন সিদ্ধান্তে তৃণমূল বিএনপির নেতাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।’
দুওসুও ইউনিয়ন বিএনপি সূত্রে জানা যায়, শনিবার জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়ন বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। সম্মেলনকে ঘিরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ইউনিয়ন বিএনপি। কিন্তু সম্মেলন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে হঠাৎ জেলা বিএনপি সম্মেলনটি স্থগিতের ঘোষণা দেয়।
জেলা বিএনপির এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন প্রার্থী ও ভোটাররা এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য হরতালের ডাক দেন। পরে তারা হরতাল প্রত্যাহার করেন।
এর আগে শুক্রবার মধ্যরাতে চিঠি পাওয়ার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা রাস্তায় নেমে আসেন। তারা বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে সড়ক অবরোধ করেন এবং মিছিল বের করেন।
হরতালের সমর্থনে স্লোগান দিতে দিতে তারা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়কে মিছিল করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যার ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থান নেয়।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য ভোটের মাধ্যমে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষার পর শনিবার সেই ভোট হওয়ার কথা ছিল। তবে জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা হঠাৎ করেই ভোট স্থগিতের ঘোষণা দেন, যা নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ তৈরি করে।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনে ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হওয়ার কথা থাকলেও জেলা কমিটির একতরফা সিদ্ধান্তে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। এতে করে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতামতকে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতা জুলফিকার আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এভাবে ভোট বাতিল করা মানে আমাদের মতামতকে দমন করা। আমরা চাই গণতান্ত্রিকভাবে নেতা নির্বাচন হোক।’
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাফরুল্লাহ্ বলেন, ‘বর্তমান কিছু পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং দলের মধ্যে যেন অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি না হয়, বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয়, এ জন্য সম্মেলনটি স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সম্মেলনটি হবে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হবে।
‘এর জন্য নেতা-কর্মীদের জেলা বিএনপি থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছি। জেলার নেতারা এ বিষয়ে একটি সমাধানে দ্রুত আসবেন।’
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৌকত আলী সরকার বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আমরা কাজ করছি।’