দীর্ঘ ১৭ দিন পর বাসায় ফিরেছেন যুক্তরাজ্যে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
স্বাস্থ্যের যথেষ্ট উন্নতি হওয়ায় চিকিৎসকরা আপাতত তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা (বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে তিনটা) বেগম খালেদা জিয়াকে তারেক রহমান তার বাসায় নিয়ে যান।
এর আগে তারেক বাংলাদেশি অধ্যুষিত ব্রিকলেন মসজিদে তার প্রয়াত ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর রুহের মাগফিরাত কামনা করে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে অংশ নেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, শুক্রবার রাতের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট হাতে আসবে। সবকিছু ভালো থাকলে তাকে রিলিজ দেওয়া হতেও পারে। তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক প্রফেসর পেট্রিক কেনেডি ও জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে থাকবেন।
খালেদা জিয়ার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তে আসা যায়নি জানিয়ে তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘উনার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। কারণ উনার বয়সটা একটা বিবেচ্য বিষয়।
‘তা ছাড়া জেলে রেখে তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তখন তাকে বিদেশে নিয়ে আসা গেলে আরও হয়তো দ্রুত সুস্থ করা যেত। এখন আমাদের চিকিৎসকদের বক্তব্য হচ্ছে আগে হলে হয়তো উনার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা যেত।’
ডা. জাহিদ আরও জানান, বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়ার লিভার, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, প্রেশার, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসসহ সব রোগের জন্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে। আপাতত ওষুধের মাধ্যমেই এটি অব্যাহত থাকবে। এর বাইরেও আরও কোনো চিকিৎসা করা যায় কি না, সে লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস হসপিটালের মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা এখানে মেডিক্যাল বোর্ডের সভায় অংশ নিয়েছিলেন।
এদিকে দ্য ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতিদিন বাসা থেকে খাবার এনে দেওয়া হতো। ছেলে তারেক রহমান, পুৃত্রবধূ জুবাইদা রহমান, নাতনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান, প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি, দুই কন্যা জাফিয়া ও জাহিয়া রহমান বিএনপি চেয়ারপারসনকে নিয়মিত দেখাশোনা করতেন।
এ ছাড়া যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ প্রতিদিন হাসপাতালে উপস্থিত থাকতেন।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেদিন হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তাকে বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতাল দ্য লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।