বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টেকসই পানি ব্যবস্থাপনায় জোর একশনএইড বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টরের

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১৩:৫৫

একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, ‘ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা অর্জনের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রের মধ্যে আলোচনা এবং সহযোগিতা গড়ে তোলা প্রয়োজন, যাতে ঐতিহ্যগত ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞান উভয়কেই একত্রিত করা যায়।’

রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে পরিবেশগত এবং মানবিক প্রয়োজনের ভিত্তিতে নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে একশনএইড বাংলাদেশ-এর ‘বাংলাদেশে পানি আলোচনার ১০ বছর: পানি জাদুঘরের অবদান’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান করা হয়েছে।

রাজধানীর একটি হোটেলে বুধবার বিকেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বইয়ের পর্যালোচনা করেন পানিসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ এবং ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. সুফিয়া খানম।

একশনএইড ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সোসাইটির চেয়ারপারসন ইব্রাহিম খলিল আল জায়াদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন সেন্টার ফর অল্টারনেটিভসের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও গবেষণাবিষয়ক পরামর্শক ড. হাসিব মো. ইরফানুল্লাহ, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের শিক্ষক ও সেন্টার ফর সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্টের (সিএসডি) পরিচালক ড. সামিয়া সেলিম।

স্বাগত বক্তব্য দেন একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির।

তিনি বলেন, ‘ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা অর্জনের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রের মধ্যে আলোচনা এবং সহযোগিতা গড়ে তোলা প্রয়োজন, যাতে ঐতিহ্যগত ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞান উভয়কেই একত্রিত করা যায়।

‘এ লক্ষ্যে পানিসম্পদের গুরত্ব, পানির ন্যায্যতা এবং নদীর অধিকার নিশ্চিত করবার জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে একশনএইড বাংলাদেশ। টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে একশনএইডের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা তুলে ধরার লক্ষ্যে এই বই প্রকাশ করা হয়েছে।’

পানিসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ এবং ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বলেন, ‘পানি হচ্ছে সীমিত সম্পদ। জলবায়ু পরিবর্তন এ সীমিত সম্পদকে আরও জটিল করে তুলছে। যেমন: এক জায়গায় বন্যা এবং অন্য জায়গায় খরা। আমাদের খুব দ্রুতই এ সমস্যা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’

টেকসই পানি ও নদী ব্যবস্থাপনার জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতার জোট গঠনের আহ্বান জানান এ ইমেরিটাস অধ্যাপক।

তিনি আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘আন্তসীমান্ত পানি ব্যবস্থাপনার পক্ষে জোরালো কণ্ঠস্বর তৈরি করতে আঞ্চলিক জোট গঠন করা প্রয়োজন। আঞ্চলিক ঐকমত্যের অভাবে পানি অধিকার রক্ষায় আমরা শক্ত অবস্থানে যেতে পারিনি।

‘ভবিষ্যতে আমাদের সফল ও কার্যকরী মডেল তৈরি করতে হবে, যা আমাদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পানি ও নদী সমস্যাগুলো চিহ্নিত ও সমাধান করতে পারবে।’

সেন্টার ফর অলটারনেটিভসের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘নদীকে শুধু পানির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার সুযোগ নাই। কারণ পানি, জ্বালানি, জীববৈচিত্র্য ও পলিমাটির এক বহুমুখী সমন্বয়ে নদীর অস্তিত্ব।

‌‘পানির পাশাপাশি এ অনিবার্য উপাদানগুলো নিয়েও আমাদের আলোচনায় আসতে হবে। আমাদের মনস্তাত্ত্বিক ভাবনায় এ পরিবর্তন এনে সবগুলো বিষয়কে আন্তসীমান্ত নদী ব্যবস্থাপনার আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. সুফিয়া খানম বলেন, ‘পানি জাদুঘরের পরিধি সম্প্রসারণ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা গড়ে তোলা, যাতে পানির টেকসই ও ন্যায়সংগত ব্যবস্থাপনার দিকে রূপান্তরমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়, সেই বিষয়েও এই বইয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যা টেকসই পানি ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।’

পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও গবেষণাবিষয়ক পরামর্শক ড. হাসিব মো. ইরফানুল্লাহ বলেন, ‘প্রমাণভিত্তিক অ্যাডভোকেসি ভালো, তবে প্রমাণ, প্রাসঙ্গিক ও জ্ঞান দিয়ে নীতি প্রভাবিত করা আরও ভালো। আমাদের নীতিতে গবেষণাভিত্তিক রেফারেন্সের পরিমাণ এক-তৃতীয়াংশেরও কম। এটি একটি বড় গ্যাপ, যা আমাদের পূরণ করতে হবে।’

সমাপনী বক্তব্যে একশনএইড ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সোসাইটির চেয়ারপারসন ইব্রাহিম খলিল আল জায়াদ বলেন, ‘পানিসম্পদ ও তার ব্যবস্থাপনা নিয়ে মানুষের চিন্তার প্রসার, পানি নিয়ে বিভিন্ন উদ্ভাবনী চিন্তার বিকাশ ঘটানো, বিভিন্ন ধরনের সংলাপকে উৎসাহিত করা, পানি নিয়ে একত্রে কাজ করতে জোট গঠন, আন্তসীমান্ত কার্যক্রমের উৎসাহ প্রদানে নিরবচ্ছিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে একশনএইড বাংলাদেশ। পানি ব্যবস্থাপনাকে টেকসই করতে এ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশা করি।’

অনুষ্ঠানে ভিডিওবার্তায় প্রকাশনার অংশ হতে পেরে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন ভারতের দ্য ওয়াটার রিসোর্সেস কাউন্সিলের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ড. মানসী বাল ভার্গব।

এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষক ও সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (সিএসডি)-এর পরিচালক ড. সামিয়া সেলিম, একশনএইড বাংলাদেশের কর্মকর্তা, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসহ জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

বইটিতে অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে একশনএইড বাংলাদেশের ১০ বছরের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টার (যেমন: আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলন আয়োজন এবং বাংলাদেশের প্রথম পানি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পানির ব্যবস্থাপনা টেকসই করা) বিষয়গুলো উঠে এসেছে।

একশনএইডের জমিকেন্দ্রিক থেকে পানিকেন্দ্রিক কৌশলে স্থানান্তরিত হওয়ার পক্ষে সমর্থনের (যেখানে নীতিমালা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে একত্র করা হয়েছে) বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে এ বইয়ে।

কমিউনিটির অংশগ্রহণ, স্থানীয় উদ্যোগ এবং জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকরণের গুরুত্বকে তুলে ধরাসহ টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধির জন্য কার্যকর কৌশলগুলোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে বইটিতে।

এ বিভাগের আরো খবর