নরওয়েকে বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি এশিয়াতে নরওয়ের পণ্য বিপণনের জন্য বাংলাদেশ হাব উল্লেখ করে বলেন, এ দেশের যুবশক্তিকে কাজে লাগানোর সুযোগ গ্রহণ করতে পারে দেশটি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকোন আরল্যান্ড গুলব্রান্ডসেন রোববার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশের তরুণ জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে এখানে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নরওয়ে থেকে লোক আনতে হবে না। আমাদের তরুণ জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে আপনারা এশিয়ায় নরওয়েজীয় পণ্য বিপণনের জন্য বাংলাদেশকে হাব হিসেবে ব্যবহার করুন।’
সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে নরওয়ের টেলিকম জায়ান্ট টেলিনরের প্রথম বিদেশি উদ্যোগ গ্রামীণফোনের উদাহরণ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, সময়ের সঙ্গে গ্রামীণফোন টেলিনর পরিবারের সবচেয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত গুলব্রান্ডসেন নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গার স্তোরের একটি চিঠি প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করেন।
চিঠিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি শক্তিশালী সমর্থন ব্যক্ত করা হয়েছে।
ওই সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনার প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টার প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন।’
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মানবাধিকার রক্ষা এবং পরিবেশগত টেকসই উন্নয়নের প্রতি প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত গুলব্রান্ডসেন জানান, বাংলাদেশে জাহাজ পুনর্ব্যবহার শিল্প এবং সবুজ জ্বালানি রূপান্তরে নরওয়ে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
প্রধান উপদেষ্টা মিয়ানমারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নরওয়ের সহায়তা কামনা করেন।
তিনি রাষ্ট্রদূতকে বলেন, ‘নরওয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বড় ভূমিকা রেখেছে। তাই রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আপনাদের সাহায্য প্রয়োজন।’
প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে জানান, বাংলাদেশে আগামী সাধারণ নির্বাচনকে ‘সর্বোত্তম ও ঐতিহাসিক’ করতে পরিকল্পনা করছে সরকার।
তিনি বলেন, ‘আমরা এটি একটি উদাহরণ সৃষ্টিকারী, ঐতিহাসিক উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে চাই।’
রাষ্ট্রদূত গুলব্রান্ডসেন জানান, ফিলিস্তিন ইস্যু, আন্তর্জাতিক করব্যবস্থা এবং প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায় নরওয়ে।
ওই সময় ফিলিস্তিনে মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে নরওয়ের নেতৃত্বে জাতিসংঘের প্রস্তাব সমর্থন করায় বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ইউরোপের দেশটির ডেপুটি হেড অফ মিশন ম্যারিয়ান্নে রাবে কানেভেলস্রুদ।