জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের দাবিতে সারা দেশে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।
এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৬ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত লিফলেট বিতরণ, সমাবেশ, নানা মাত্রার জনসংযোগ করবে সংগঠন দুটি।
রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
ওই সময় হাসনাত বলেন, ‘অভ্যুত্থানে যেমন দেশের প্রত্যেক মানুষের অংশগ্রহণ ছিল, আমরা মনে করি এই ঘোষণাপত্রে জনমানুষের আকাঙক্ষার প্রতিফল ঘটবে। আমরা মানুষের কাছে ছুটে যেতে চাই।
‘দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, সব পেশাজীবী মানুষের মাঝে জনসংযোগ চালাব।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি যৌথভাবে এ কাজটি করবে বলে জানান হাসনাত।
তিনি বলেন, ‘গত ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে মার্চ ফর ইউনিটিতে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই প্রক্লেমেশন ঘোষণার দাবি জানিয়েছি। ঘোষণাপত্র নিয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি সরকার এখনও নেয়নি। সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন।
‘আমাদের আহ্বান থাকবে, সরকার শিগগিরই কাজ শুরু করবে। সরকারকে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’
অভ্যুত্থানকে সমুন্নত রাখার প্রয়াসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে হাসনাত কিছু দাবি উপস্থাপন করেন।
১. জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং আহতদের বিনা মূল্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুচিকিৎসা প্রদানের প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট করা।
২. অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের খুনি ও দোসরদের বিচার নিশ্চিত করার স্পষ্ট অঙ্গীকার ব্যক্ত করা।
৩. বিদ্যমান ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো বিলোপ করতে সব ধরনের সংস্কারের ওয়াদা
৪. ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল ভিত্তি সংবিধান বাতিল করে নির্বাচিত গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করা।
৫. ঘোষণাপত্রে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নেতৃত্ব পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা।
৬. ১৯৪৭ সালের দেশভাগ, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে যোগসূত্র রেখে ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতা পরিষ্কার করা।
৭. নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে সব ধরনের বৈষম্য নিরসনের মধ্য দিয়ে নাগরিক পরিচয় প্রধান করে রাষ্ট্রকাঠামো গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেয়া।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, সহমুখপাত্র সালেহ উদ্দিন সিফাত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদসহ জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।