বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিএনপি সব গণতান্ত্রিক উদ্যোগকে স্বাগত জানাবে: তারেক রহমান

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১ জানুয়ারি, ২০২৫ ২৩:১৩

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘সংস্কার নাকি নির্বাচন- কোনো কোনো মহল থেকে এ ধরনের প্রশ্ন রাখা হচ্ছে। বিএনপি তথা দেশপ্রেমিক সব মানুষ, সব রাজনৈতিক দল এটিকে স্রেফ অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কূটতর্ক বলেই বিবেচনা করে। বিএনপি মনে করে রাষ্ট্র, রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের গুণগত পরিবর্তনের জন্য সংস্কার এবং নির্বাচন উভয়ই প্রয়োজন।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশে নতুন রাজনৈতিক দলের জন্ম হতেই পারে। এটা স্বাভাবিক রাজনৈতিক নীতি। এ নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। রাজনীতির প্রয়োজনে বিএনপি সব গণতান্ত্রিক উদ্যোগকে স্বাগত জানাবে।

রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইইবি) মিলনায়তনে বুধবার বিকেলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্রতিষ্ঠা করেন।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি তার জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত যেকোনো পরিস্থিতিতে বহু দল ও মতের চর্চার পক্ষে। এক্ষেত্রে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত স্বচ্ছ। জনগণ কোন রাজনৈতিক দলকে গ্রহণ করবে কিংবা বর্জন করবে- নির্বাচনের মাধ্যমে তারা সেই রায় দেবে। তবে যারা জনগণের আদালতের রায়ের মুখোমুখি হতে ভয় পায় কিংবা ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে তারাই নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।

‘তাই গণতন্ত্রকামী জনগণের প্রতি আহ্বান- আপনারা ধৈর্য্য হারাবেন না। নির্বাচনের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে থাকুন। নির্বাচন কমিশন তাদের অর্পিত দায়িত্ব যথারীতি পালন করবে সেই বিশ্বাস রাখুন।’

বিএনপির নেতা-কর্মৗদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। বরং সতর্ক থাকবেন। নিজেরা এমন কোনো কাজে সম্পৃক্ত হবেন না যাতে কেউ অপপ্রচারের সুযোগ পায়। জনগণের কাছে আস্থাভাজন হোন। জনগণকে আস্থায় রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।’

চব্বিশের গণ-আন্দোলনে ছাত্রদলের যেসব কর্মী শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণ করে তারেক রহমান বলেন, ‘রাষ্ট্র, রাজনীতি, সরকার প্রচলিত বিধি ব্যবস্থা সংস্কার করে আরও উন্নত বিধি ব্যবস্থার পক্ষে ছাত্র-তরুণরা অবস্থান নেবে। সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে দেশের তরুণ জনশক্তি ভূমিকা রাখবে এটাই স্বাভাবিক। এটাই তারুণ্যের ধর্ম।’

হঠাকারী সিদ্ধান্ত না নিতে নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে, কোনো হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে যাতে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বিনষ্ট হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়। এ ব্যাপারে ছাত্রদলের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে।

‘মনে রাখা দরকার, লোভ বা লাভের ঊর্ধ্বে উঠে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাবলম্বী বাংলাদেশ গড়তে বিশেষ করে ছাত্র-তরুণদের ভূমিকা অপরিসীম।’

সংস্কার কর্মসূচি প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘সংস্কার নাকি নির্বাচন- কোনো কোনো মহল থেকে এ ধরনের প্রশ্ন রাখা হচ্ছে। বিএনপি তথা দেশপ্রেমিক সব মানুষ, সব রাজনৈতিক দল এটিকে স্রেফ অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কূটতর্ক বলেই বিবেচনা করে।

‘বিএনপি মনে করে রাষ্ট্র, রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের গুণগত পরিবর্তনের জন্য সংস্কার এবং নির্বাচন উভয়ই প্রয়োজন। বিদ্যমান ব্যবস্থাকে সময়োপযোগী করতে সংস্কার একটি অনিবার্য ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।

‘একইভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে টেকসই এবং প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নির্বাচনই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর পন্থা। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ ভোটের অধিকার প্রয়োগের যে সুযোগটি পায় তা রাষ্ট্র-জনগণের রাজনীতির ক্ষমতা নিশ্চিত করে।’

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। সংস্কার কার্যক্রম অবশ্যই প্রয়োজন। এ কারণে অন্তর্বর্তী সরকার হয়তো তাদের দৃষ্টিতে অনেক বড় বড় সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তবে এসব কর্মসূচির আড়ালে জনগণের নিত্যদিনের দুদর্শা উপেক্ষিত থাকলে জনগণ হয়তো ক্ষোভে সরকারের সংস্কার দাবি নিয়ে মুখ খুলতে বাধ্য হবে।’

বিএনপির দ্বিতীয় শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘ইতোমধ্যে জনগণের মনে প্রশ্ন উঠেছে- পলাতক স্বৈরাচারের আমলে সৃষ্ট বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার ভেতর আনতে সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে? ফ্যাসিস্ট আমলে দায়ের করা লাখ লাখ মামলায় এখনও কেন প্রতিদিন মানুষকে আদালতের বারান্দায় ছুটোছুটি করতে হচ্ছে?’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিএনপি বার বার যে কথাটির ওপরে জোর দিতে চায় সেটি হলো- অন্তর্বর্তী সরকার তাদের সংস্কার কিংবা গৃহীত পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার নির্ধারণে ব্যর্থতার পরিচয় দিতে চাইলে ষড়যন্ত্রকারীরা ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট বিনষ্ট করার সুযোগ নেবে। ইতোমধ্যে তারা একাধিকার বার অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির অপচেষ্টা চালিয়েছে।

‘ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা দেশে গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি বিএনপি দেখতে চায় না। এ কারণে জনগণের পক্ষের রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এই সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রেখেছে।’

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘তোমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে- শিক্ষার্থীরা জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে প্রধান হাতিয়ার। রাষ্ট্র ও রাজনীতি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। তবে শিক্ষার্থী হিসেবে তোমাদের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য হতে হবে লেখাপড়া, লেখাপড়া এবং লেখাপড়া।

‘আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামীর বাংলাদেশ। সুতরাং শিক্ষার্থীদের শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ করা না গেলে নিশ্চিতভাবে আবারও পথ হারাবে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ।’

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ছাত্রদলের সাবেক নেতৃবৃন্দের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আমানউল্লাহ আমান, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, রাকিবুল ইসলাম বকুল, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, রাশেদ ইকবাল খান, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ঢাকা বিশ্ববিদ্য্যালয় ছাত্রদলের গণেশ চন্দ্র রায় সাহস প্রমুখ বক্তব্য দেন।

এ বিভাগের আরো খবর