ফেনীতে প্রতারণা, চাঁদাবাজি ও মানহানির অভিযোগে করা মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বহিষ্কৃত সহ-সমন্বয়ক ওমর ফারুক শুভকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুভ ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়নের জগতজীবনপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে।
পুলিশ সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী আজিজুর রহমান রিজভীর পক্ষে তার বাবা ছিদ্দিকুর রহমান বাদী হয়ে ওমর ফারুক শুভকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
প্রসঙ্গত, গত আগস্টে আন্দোলনে শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত থাকায় শুভকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফেনী জেলার সহ-সমন্বয়ক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তারপরও বিগত কয়েক মাস ধরে জেলার অন্য সমন্বয়ক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দিয়েই শুভকে বিভিন্ন কর্মসূচি ও সভা-সমাবেশে অংশ নিতে দেখা গেছে।
থানায় অভিযোগকারী আজিজুর রহমান রিজভী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক, তথ্য উপদেষ্টা ও আমার নাম ভাঙিয়ে সে (শুভ) চাঁদাবাজির চেষ্টা করেছে। ন্যূনতম যোগাযোগ ও সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও তার এমন কাণ্ড আমার জন্য সম্মানহানিকর। বিষয়টি অবগত হয়ে আমি ফেনী মডেল থানায় অভিযোগ করেছি।
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার একটি আশীর্বাদস্বরূপ। এসব নামে-বেনামে সমন্বয়কদের কারণে এ ব্যানারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, এমন কোনো কাজে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।’
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, ‘মামলার পর অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হবে।’
প্রসঙ্গত, ইতোপূর্বে নানা কেলেঙ্কারির দায়ে সাময়িক বরখাস্ত ফেনী আলিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হাসানকে স্বপদে বহাল রাখার আশ্বাস দিয়ে চাঁদা দাবি করেন শুভ। চাঁদা দাবির ১৫ মিনিট ১২ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর থেকে জেলাজুড়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
ভাইরাল ওই কল রেকর্ডে শুভ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল কাদের ও হামজা মাহবুবের কথা বলে অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হাসানের কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। যেখানে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ফেনীর আজিজুর রহমান রিজভীর নাম উল্লেখ করেন তিনি।