বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণ করছে। এ অবস্থায দেশটির বিপ্লবী গোষ্ঠীর পাশাপাশি সরকার যেহেতু এখনও জান্তা, তাই দু’পক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছে বাংলাদেশ।
সোমবার দুপুরে সীমান্ত এলাকা ঘুরে টেকনাফের দমদমিয়াস্থল নাফ নদে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন জেটি ঘাটে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ সীমান্ত পুরোপুরি বিজিবির নিয়ন্ত্রণে। সীমান্তে স্থানীয়দের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে কিছু দালাল রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে সহযোগিতা করছে। আমাদের স্বার্থ রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে প্রথম থেকে মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি।
‘এখনও সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। তবে সীমান্তবাসীর নিরাপত্তায় বিজিবি ও কোস্টগার্ড পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। সীমান্তবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি রয়েছে। সীমান্তে সব বাহিনীর জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
টেকনাফ মাদক পাচারের রুট হিসেবে পরিচিত উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মাদক অনেক আগের সমস্যা। মাদক পাচারে এই এলাকা বদির জন্য জন্য বিখ্যাত ছিল। তবে মাদক পাচার রোধ করতে সবার সহযোগিতা দরকার। এটা শুধু আইন দিয়ে সমাধান করা সম্ভব না। সীমান্তে সব পরিস্থিতি সমাধান হয়ে গেলে নাফ নদে মাছ শিকারসহ শাহপরীর দ্বীপে করিডোর খুলে দেয়া হবে।’
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সীমান্ত বাহিনীর অগোচরে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ করেছে। সব বাহিনীর অক্লান্ত পরিশ্রমের পরও ফাঁক দিয়ে কিছু বাংলাদেশি অসাধু দালাল চক্র মরিয়া হয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করাচ্ছে। এ দালাল চক্রকে প্রতিহত করতে সবার সহযোগিতা দরকার। না হলে এরা আরও ভয়ংকর হয়ে উঠবে।
‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস জাতিসংঘ সম্মেলনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বিশ্বের নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। পরিস্থিতি যাই হোক অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে দেয়া হবে না।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সোমবার দুপুরের দিকে হেলিকপ্টরযোগে ঢাকা থেকে টেকনাফে পৌঁছান। পরে ২ বিজিবির ব্যাটালিয়নে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর টেকনাফের কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্ট পরিদর্শন করে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। এ সময় বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান ছিদ্দিকী তার সঙ্গে ছিলেন।