সিলেটে মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন।
জকিগঞ্জে একাধিক বাসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে সোমবার সংগঠনটির পক্ষ থেকে কর্মবিরতির ডাক দেয়া হয়।
এদিকে বাস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে সোমবার সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল করেনি। এছাড়া রোববার রাতে জকিগঞ্জ থানায় ক্ষতিগ্রস্ত বাসের চালক বাদী হয়ে অজ্ঞাত অর্ধশত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দায়ের করেছেন।
জানা যায়, রোববার সকালে জকিগঞ্জের কামালগঞ্জ আব্দুল মতিন কমিউনিটি সেন্টারের পাশে শিশু-কিশোররা ফুটবল খেলছিল। হঠাৎ বলটি সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে চলে গেলে সেটি আনতে আবির আহমদ (১৪) নামের এক কিশোর দৌড় দেয়। এ সময় একটি চলন্ত বাসের নিচে পড়ে সে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা বাসটি আটকে পার্শ্ববর্তী একটি স্কুলের মাঠে নিয়ে এতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, এটি ছাড়াও আরও অন্তত তিনটি বাস ভাঙচুর করা হয়। এর প্রতিবাদে সোমবার পরিবহন শ্রমিকরা সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।
জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুহিত সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘আমাদের বাসের চালক অন্যায় করলে আইন অনুযায়ী তার শাস্তি হবে। কিন্তু আইন হাতে তুলে নিয়ে বাস ভাঙচুর করা ও পোড়ানো সন্ত্রাসী কাজ। আমরা এর বিচার চাই। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বাসের চালক বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের আবেদন করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অন্তত চারটি বাসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে ও নিরাপত্তার অভাবে আমাদের চালকরা আজ (সোবার) সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।
‘এছাড়া আগামীকাল (মঙ্গলবার) সকাল থেকে পুরো সিলেট জেলায় কর্মবিরতি পালন করবেন বাস চালক ও শ্রমিকরা। আমাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করবে বাকি পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলোও।
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, ‘সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস-মিনিবাস চলাচল করছে না বলে জানতে পেরেছি। বাস ভাঙচুরের দাবি করে গতকাল (রোববার) রাতে হেলাল মিয়া নামের একজন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেটি আমরা তদন্ত করে দেখছি। উপজেলাজুড়ে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ।’
এদিকে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে সকাল থেকে বাস, মিনিবাস ও মাইক্রোবাস বন্ধ থাকায় দিনভর চরম দুর্ভোগ পোহান যাত্রীরা। বিশেষ করে অফিসগামীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। তারা অতিরিক্ত ভাড়া গুনে বিকল্প যানবাহনে অফিসে যান এবং অফিস থেকে বাড়ি ফেরেন।
পথচারীদের অভিযোগ, বাস শ্রমিকরা বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে রাখায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাও চলাচল করতে পারেনি। ফলে বেশি দুর্ভোগে পড়েন জরুরি প্রয়োজনে সড়কে বেরুনো লোকজন।
প্রসঙ্গত, বাসচাপায় নিহত আবির আহমদ জকিগঞ্জের গণিপুর কামালগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজর নবম ছাত্র এবং বারঠাকুরী ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের বাহার উদ্দিনের ছেলে।