ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চারজনসহ ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনায় বেপরোয়া গতির বাসটির চালক মো. নুরুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শনিবার ভোরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর বাসচালক নুরুদ্দিন সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় লুকিয়ে ছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে শনিবার ভোরে মিজমিজি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসবাদের বরাতে র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তার নুরুদ্দিন গত ১০ বছর ধরে বাস, ট্রাক ও পিকআপসহ বিভিন্ন গাড়ি চালিয়ে আসছেন। তার ড্রাইভিং লাইসেন্স দু’বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়। বাসটিরও (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-৫১৭০) ফিটনেস সনদ ছিল না।
দুর্ঘটনার পর নুরুদ্দিন কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে অটোতে আব্দুল্লাহপুরে আসেন। পরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় তার ফুফাতো বোনের বাসায় গিয়ে আত্মগোপন করেন। পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্যে র্যাব-১০ ও র্যাব-১১ অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
এর আগে শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বাসটি বেপরোয়া গতিতে ছুটে এসে টোল পরিশোধের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা একটি প্রাইভেটকার, একটি মোটরসাইকেল ও একটি মাইক্রোবাসকে চাপা দেয়। এতে প্রাইভেটকারে থাকা একই পরিবারের চারজন ও মোটরসাইকেলে থাকা এক নারী ও সাত বছরের এক শিশু নিহত হয়। এ ঘটনায় আরও ১০ জন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন।
নিহতরা হলেন- মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নন্দনকোনা গ্রামের বাসিন্দা ও দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেটকারের মালিক নুর আলমের স্ত্রী আমেনা আক্তার, তার বড় মেয়ে ইসরাত জাহান, ছোট মেয়ে ১১ বছর বয়সী রিহা মনি, ইসরাত জাহানের ছেলে দুই বছরের আইয়াজ হোসেন, মোটরসাইকেলের চালক সুমন মিয়ার স্ত্রী রেশমা আক্তার ও তার ছেলে সাত বছর বয়সী মো. আবদুল্লাহ।
গ্রেপ্তার বাসচালকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।
এদিকে গত শুক্রবার দুর্ঘটনার পর মুন্সীগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের উপ-সহকারী পরিচালক সফিকুল ইসলাম জানান, গত ছয়দিনে এক্সপ্রেসওয়েতে আটটি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে সাতজন নিহত এবং কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন।