বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বর্তমান সরকারের উপদেষ্টারা প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়ে প্রতিপক্ষের মতো কথা বলছেন। আমরা তাদের প্রতিপক্ষ মনে করি না; তারা আমাদের প্রতিপক্ষ হওয়ার যোগ্যও নন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বৃহস্পতিবার ‘রক্তাক্ত মতিহার ও রিজভী আহমেদ, ২২ ডিসেম্বর ৮৪’ স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ইউনিভার্সিটি ন্যাশনালিস্ট এক্স-স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এই আলোচনার আয়োজন করে।
উপদেষ্টাদের উদ্দেশ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘তাদের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্কে কমেন্ট (মন্তব্য) করার কী দরকার। তারা কি প্রতিপক্ষ হবেন? আমরা তো তাদের প্রতিপক্ষ মনে করি না! তারা আমাদের প্রতিপক্ষ হওয়ার যোগ্যও নন।
‘আমরা রাজনীতি করি। তারা তো রাজনীতিই করেন না; তাহলে প্রতিপক্ষ হবেন কীভাবে? আমরা ইলেকশন করব, তারা কি আমাদের বিরোধী ইলেকশন করবেন? তারা তো আমাদের প্রতিপক্ষ নন!’
প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে তো আমরাই প্রতিষ্ঠা করেছি, নাকি? তারা তো জোর করে ক্ষমতা দখল করেনি। আমরা এই দেশের মানুষ, আন্দোলনের মধ্যে যারা ছিলাম, আমরা সবাই মিলে তাদের প্রতিষ্ঠা করেছি। তাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা কী?
‘জনগণের কল্যাণে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন। যারা দোষ করেছেন, অপরাধ করেছেন, খুন করেছেন, দুর্নীতি করেছেন, তাদের বিচারের চেষ্টা করবেন। যতটা পারেন করবেন। আর যে গণতন্ত্রের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই-সংগ্রাম করেছি, সেই গণতন্ত্রের জন্য ক্ষেত্রটি তৈরি করে একটি নির্বাচন দেবেন।’
গত ৫৩ বছরে রাজনীতিবিদরা দেশের জন্য কিছুই করেননি- পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেন বিএনপির এই বর্ষীয়াণ নেতা।
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান দুর্ভিক্ষকবলিত জাতির জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করেছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য গার্মেন্টস শিল্প করেছিলেন। প্রবাসে কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
‘সমুদ্রের মাছ শিকারের ব্যবস্থা করেছিলেন এবং বিদেশে মাছ রপ্তানি করেছিলেন। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন করেছিলেন। কৃষি সম্প্রসারণের জন্য খাল কেটেছিলেন। এসব কি উন্নয়ন নয়?’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘খালেদা জিয়া শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্যের ব্যবস্থা করে লেখাপড়ার প্রসার করেন, মেয়েদের বৃত্তির ব্যবস্থা করেছিলেন। আজ যারা সমালোচনা করেন তারা অন্তত এরকম একটা কাজ করুন- (এমন কিছু) করার পর সমালোচনা করুন।’
এই নেতা বলেন, ‘যার সামর্থ্য কম, সে নিজের অক্ষমতা ঢাকার জন্য সমালোচনাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। মিথ্যা সমালোচনাকারীদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে।’
রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ন্যাশনালিস্ট এক্স-স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যক্ষ বাহাউদ্দিন বাহারের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, কৃষক দল সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, রুনেসার সম্পাদক মল্লিক মো. মোকাম্মেল কবীর প্রমুখ।