চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দু’জনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছেন আরও চারজন।
মল্লিকপুর শহীদ জিয়া স্মৃতি সংঘের আয়োজনে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান শেষে মঙ্গলবার রাতে পৌনে ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের এজাবুল হকের ছেলে মাসুদ রানা ও একই ইউনিয়নের আব্দুর রহিমের ছেলে রায়হান। তাদের বয়স যথাক্রমে ২২ ও ১৫ বছর।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ নাচোল উপপজেলার মল্লিকপুরের বাহার আলী মন্ডলের ছেলে আজিজুল হক ও এজাবুলের ছেলে তাসিমকে আটক করেছে।
নিহত মাসুদ রানা নাচোল উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলেন। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পাওয়া এক ভিডিওতে তাকে ‘জয় বাংলা’ লিখতে দেয়া যায়।
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পূর্ববিরোধ থেকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। কোনো রাজনৈতিক বিষয় নেই।
নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মল্লিকপুর বাজারে বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে স্থানীয় দুটি গ্রুপ নিজেদের মধ্যে কথাকাটাকাটি থেকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় দুজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছে। আহতদের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বুধবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বিফ্রিং করা হয়।
বিফ্রিংয়ে সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ বলেন, ‘১২-১৫ দিন আগে নাচোল উপজেলার খোলসী গ্রামে আব্দুল খালেকের পেয়ারা বাগানে কাজ করার সময় লেবার সর্দারের প্রস্রাব করার ভিডিও গোপনে ধারণ করে বাগানের শ্রমিক শাহিন। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টও করে। বিষয়টি সালামের নজরে এলে উভয় পক্ষে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এর জেরে তাদের মধ্যে ক্ষোভ ছিলো। মঙ্গলবার মল্লিকপুর গরুর হাটে মল্লিকপুর শহীদ জিয়া স্মৃতি সংঘ আয়োজিত আলোচনা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সালাম ও তার সঙ্গীরা এলে শাহীন ও তার সঙ্গীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ছয়জন গুরুতর আহত হন। তাদের মধ্যে দুজন মারা যান।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় রাজনৈতিক যে বিষয়টি আসছে, আমরা এ ধরনের কোনো কিছু পাইনি। জয়বাংলা লেখার কারণে বা স্লোগান দেয়ার কারণে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা নয়। তারপরও ফেসবুকে যেটা এসেছে সেটা খতিয়ে দেখব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা জানতে পেয়েছি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ৭-৮ জন জড়িত ছিল। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’