জাতীয় নির্বাচনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছেন জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ কে এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় নির্বাচনের যে সময়ের ইঙ্গিত দিয়েছেন, সে অনুযায়ী নির্বাচন করতে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’
আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিইসি এ কথা বলেন।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার সকালে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে যদি প্রত্যাশিত মাত্রার সংস্কার যোগ করি, তাহলে আরও অন্তত ছয় মাস অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে। মোটা দাগে বলা যায়, ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা যায়।’
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সিইসি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের জন্য আমরা প্রথম দিন থেকেই কাজ শুরু করেছি। জাতীয় নির্বাচনের জন্য যেসব প্রস্তুতির দরকার তার সবই আমাদের রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় নির্বাচনের যে সময় ইঙ্গিত দিয়েছেন, সে অনুযায়ী নির্বাচন করতে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’
স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে ইন্ডিকেশন (ইঙ্গিত) দিয়েছেন সেটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তিনি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে কোনো কিছু বলেননি।
‘আমাদের যারা স্টেকহোল্ডার, রাজনৈতিক দল- তারাও সংসদ নির্বাচনের কথা বলেছেন। তারা অন্তবর্তীকালীন সরকার থেকে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তাস্তরের কথা বলেছেন। কাজেই আমরা সংসদ নির্বাচনের কথা ভাবছি। এই মুহূর্তে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো চিন্তা আমাদের নেই।’
সংসদীয় সীমানা পুনর্নির্ধারণ প্রশ্নে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সীমানা পুনর্নির্ধারণ হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে। অতীতের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে যদি কোনো অনিয়ম হয়, কোনো প্রার্থীকে জেতানোর জন্য বা কাউকে হারানোর জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনো সীমানা পুনর্নির্ধারণ হয়ে থাকলে আমরা অবশ্যই সেটি দেখব। ২০০১ সালের সীমানায় হবে না, বর্তমানেরটার ভিত্তিতে হবে- বিষয়টি তা নয়, আমরা ন্যায্যতার ভিত্তিতে এটি করব।’
বিদ্যমান ভোটার তালিকায় নির্বাচন হবে নাকি নতুন ভোটার তালিকা হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘দুই মাসের মধ্যে আমাদের হাতে একটি নতুন চূড়ান্ত ভোটার তালিকা আসবে। এরপর আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করব।
‘অনেকে মারা গেছেন, অনেকে বাদ পড়েছেন। অনেক বিদেশি ভোটার হয়েছেন, ভোটারের ডুপ্লিকেশন হয়েছে- এমন তথ্য আমরা পাচ্ছি। এগুলো যাচাই-বাছাই করে আমরা ওই তালিকা সংশোধন করব। সংশোধিত তালিকার আলোকেই ভোট হবে।’
নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা একটি সময়সীমা তো ঘোষণা করেছেন। সে অনুযায়ী আমরা এগুব। আমরা পাবলিকলি কোনো রোডম্যাপ ঘোষণার চিন্তা করছি না। তবে কাজ করার জন্য আমাদের নিজস্ব একটি কর্মপরিকল্পনা তো থাকবেই।’