বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাষ্ট্র মেরামতের সময়সীমা জানার অধিকার জনগণের আছে: তারেক রহমান

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ২০:৩৭

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণার কথা শুনলেই যদি উপদেষ্টাদের চেহারায় অস্বস্তির ছাপ ফুটে ওঠে তাহলে সেটি হবে অবশ্যই গণআকাঙ্ক্ষাবিরোধী। সরকার তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণের কাছে যত বেশি স্বচ্ছ থাকবে, জনগণ তাদের প্রতি তত বেশি সমর্থনের হাত প্রসারিত রাখবে।’

অচিরেই নির্বাচনি রোডম্যাপে বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, রাষ্ট্র মেরামতের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আর কত সময় প্রয়োজন, সেটি জানার অধিকার জনগণের আছে।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রোববার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।

নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘শত অস্পষ্টতা কাটিয়ে অচিরেই নির্বাচনি রোডম্যাপে যাত্রা শুরু করবে আমাদের প্রিয় এই বাংলাদেশ। সেই যাত্রায় আবারও বলছি, আপনাদের বিশ্বস্ত সঙ্গী হচ্ছে দেশের গণতন্ত্রকামী স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণ। আপনারা জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে সঙ্গে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।’

তারেক রহমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণার কথা শুনলেই যদি উপদেষ্টাদের চেহারায় অস্বস্তির ছাপ ফুটে ওঠে তাহলে সেটি হবে অবশ্যই গণআকাঙ্ক্ষাবিরোধী। সরকার তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণের কাছে যত বেশি স্বচ্ছ থাকবে, জনগণও তাদের প্রতি তত বেশি সমর্থনের হাত প্রসারিত রাখবে।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কী করতে চাইছে? রাষ্ট্র মেরামতের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আর কত মাস কিংবা কত সময় প্রয়োজন, সেটি জানার অধিকার জনগণের রয়েছে।

‘সরকার জনগণের সামনে তাদের আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণা করলে তা জনগণের কাছে সরকারের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতাই নিশ্চিত করবে। প্রশাসনিক কার্যক্রমেও গতিশীলতা বাড়বে।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা তুলে ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশ ও স্বাধীনতা রক্ষা পেয়েছে। এ কারণে প্রায়ই আমি বলে থাকি, ১৯৭১ সাল ছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার অর্জনের আর ২০২৪ সাল দেশ ও জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার।

‘ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে এবারের বিজয় দিবস অবশ্যই বেশি আনন্দের, গৌরবের এবং অনেক বেশি অর্থবহ ও তাৎপর্যপূর্ণ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে চাই, আগামীর বাংলাদেশে প্রতিটি স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস হয়ে উঠবে জনগণের প্রতি রাষ্ট্র ও সরকারের দায় কিংবা প্রতিশ্রুতি পূরণের একটি অর্থবহ দিন।’

তিনি বলেন, রাষ্ট্র ও জনগণকে স্বনির্ভর এবং শক্তিশালী করতে হলে রাষ্ট্র ও রাজনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের লালন, বিকাশ আর চর্চা অত্যন্ত জরুরি। আমরা মনে করি, রাষ্ট্র ও সমাজে গণতান্ত্রিক রাজনীতি চর্চার অন্যতম প্রাতিষ্ঠানিক কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা গঠিত জাতীয় সংসদ। জবাবদিহিমূলক সরকার ও সংসদ যথাযথভাবে কার্যকর থাকলে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত থাকে। আমাদের মনে রাখা দরকার, জনগণ শক্তিশালী না থাকলে জাতীয় ঐক্যও শক্তিশালী হয় না।’

তারেক রহমান বলেন, ‘প্রায় প্রতিদিন দেশের কোনো না কোনো হাসপাতালে ডেঙ্গুতে মানুষের মৃত্যু অব্যাহত রয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসা খরচ জোগাতে অনেকের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। এর পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সমাজের প্রায় প্রতিটি মানুষ দিশেহারা। প্রতিদিনের সংসারের ব্যয় মেটাতে জনগণকে যুদ্ধ করতে হচ্ছে।

‘জনজীবনের নিত্য দুর্ভোগ কিংবা বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি শুধু সংস্কারের নামে সময়সংক্ষেপণ করে তাহলে জনগণের কাছে সংস্কার আগে না সংসার আগে- এই প্রশ্নটি মুখ্য হয়ে উঠতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘দুর্ভোগ সত্ত্বেও জনগণ এখনও সরকারের বিরুদ্ধে তেমন উচ্চবাচ্য করছে না। কারণ জনগণ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সফল দেখতে চায়। তবে আগেও বলেছি আজও উল্লেখ করতে চাই- অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিজেরা নিজেদেরকে সফল দেখতে চায় কিনা তা তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমেই প্রমাণ করতে হবে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘একটি দেশের জন্য ৫৪ বছর সময় কম নয়। এই কথাটি শনিবার একজন প্রতিবন্ধী ভাই উল্লেখ করেছেন। লাখো মানুষের রক্তের ওপর দিয়ে দেশের জনগণ আজ অভূতপূর্বে ঐক্যের মোহনায় এসে দাঁড়িয়েছে। এই ঐক্য কাজে লাগিয়ে একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।

‘একটি বৈষম্যহীন মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে বিএনপি ইতোমধ্যে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্যই হচ্ছে, শিশু-নারী-বৃদ্ধ অথবা দলমত ও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে রাষ্ট্রকে অবশ্যই প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব নিতে হবে।’

আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা এখন যেটা চাই, প্রতিটি বাংলাদেশি এই মুহূর্তে যেটা চায় সেটা হচ্ছে তারেক রহমানের নেতৃত্ব। তিনি যেন দ্রুত দেশে ফিরে আসতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘আসুন, আমাদের নেতা তারেক রহমানের যুগান্তকারী ৩১ দফা কর্মসূচিকে আমরা সামনে দিকে এগিয়ে নিয়ে যাই। আমি বার বার যে কথাটা বলছি, আমাদের অবশ্যই অতি দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংস্কারের পথটা সুগম করতে হবে। সেটাই হচ্ছে একমাত্র যোগ্য কাজ, সেটাই হবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। আসুন, আমরা যারা বিএনপির নেতা-কর্মী-সমর্থক রয়েছি, সবাই একযোগে এই লক্ষ্যে এগিয়ে যাই।’

বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, যুবদল সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এসএম জিলানী ও কৃষকদল সভাপতি হাসান জাফির তুহিন বক্তব্য দেন।

এ বিভাগের আরো খবর