কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে জোর করে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর প্রস্তুতিকালে ৩০ জনকে উদ্ধার করেছে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরীর সাইফুলের বাড়ি থেকে শনিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া লোকজনের মধ্যে ২৮ জন রোহিঙ্গা, যারা উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পের বাসিন্দা। বাকি দুজন বাংলাদেশি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, শনিবার রাত ১১টার দিকে মানব পাচারকারী একটি চক্র টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় রোহিঙ্গাদের বন্দি রেখে মুক্তিপণ আদায় করে। পরে তাদের জোর করে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে জমায়েত করে। এ খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়।
তিনি জানান, অভিযানে দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় সাইফুলের বাড়ি থেকে বন্দি থাকা রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করা হয়, কিন্তু কৌশলে দালালরা পালিয়ে যায়। তাদের মধ্যে ১৫ পুরুষ, তিন নারী ও ১২ শিশু রয়েছে।
পলাতক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এজাহার প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গা নারী সফুরা বেগম বলেন, ‘আমরা পাঁচজন মিলে টেকনাফ হাসপাতালে চিকিৎসা করার জন্য আসি। গাড়ি থেকে নামলে একটি টমটম জানতে চায়, আপনারা কোথায় যাবেন। আমরা বলছি হাসপাতালে যাব, কিন্তু টেকনাফ হাসপাতাল আমরা চিনি না।
‘টমটমচালক এ সুযোগ ব্যবহার করে আমাদের নিয়ে একটা অচেনা জায়গায় চলে যায়। তখন আমাদের কয়েকজন যুবকের হাতে তুলে দেয়। পরবর্তী সময়ে জানতে পারলাম, তারা আমাদের বিক্রি করে ফেলছে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে।’
টেকনাফ থানায় রোববার সকালে কথা হয় ৩০ জনের মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে। অপহরণের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পাচারের ভয়াবহ কাহিনি বর্ণনা করেন তারা।
কতজন অপহরণের শিকার হয়েছিল জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া ৩০ জনের মধ্যে ২০ জনকে অপহরণকারীরা মালয়েশিয়া পাচারের চেষ্টা চালিয়ে ছিল। বাকিরা অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যেতে চেয়েছিলেন।’
তিনি জানান, সংঘবদ্ধ মানব পাচার চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে পরস্পর যোগসাজশে বাঙালি ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে অপরাধ করছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘রোহিঙ্গা ও বাঙালিদের অপরণ করে মানব পাচারকারী চক্র। শনিবার রাতে পাচারকালে ৩০ জনকে উদ্ধার করে টেকনাফ থানা পুলিশ।
‘মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানো হচ্ছে। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে নিয়মিত।’