বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংস্কার প্রক্রিয়ায় ইইউ’র পূর্ণ সমর্থন, পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৮:০৯

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের বৈঠকে শ্রম অধিকার, বাণিজ্য সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন ও টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে উভয় পক্ষের অঙ্গীকার ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়।

সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিরা। পরামর্শ ও সুপারিশ জানিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি বাংলাদেশকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সোমবার ইইউভুক্ত ১৯ দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এসব কথা জানান।

বৈঠকে বাংলাদেশে থাকা ইইউভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূত ছাড়াও অনাবাসী ইইউভুক্ত দেশের রাষ্ট্রদূতগণ উপস্থিত ছিলেন।

ইইউ’র ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অফ ডেলিগেশন মাইকেল মিলার।

অপরদিকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে ১৫ জন প্রতিনিধি তাদের মতামত তুলে ধরেন। বৈঠকে শ্রম অধিকার, বাণিজ্য সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন ও টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে উভয় পক্ষের অঙ্গীকার ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে গত ১৬ বছর ধরে অত্যাচার, শোষণ, বলপূর্বক গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র সংক্ষেপে তুলে ধরেন। তিনি অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রের বিষয় উল্লেখ করে দুর্নীতি, অর্থপাচার এবং ব্যাংকিং সিস্টেমকে কীভাবে বিপর্যস্ত করা হয়েছিল সেসবও কথা জানান।

বাংলাদেশ সম্পর্কে ব্যাপক আকারে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এই মিস-ইনফরমেশন ঠেকাতে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি।’

শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা যে ব্যাপক পরিমাণ অর্থ পাচার করে নিয়ে গেছে তা দিয়ে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাম্প্রতিক মতবিনিময়ের কথাও বৈঠকে উল্লেখ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কেও ইইউ প্রতিনিধিদের বিশদভাবে জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান।

ড. ইউনূস উপস্থিত রাষ্ট্রদূতদেরকে বাংলাদেশিদের জন্য তাদের ভিসা সেন্টার দিল্লি থেকে সরিয়ে ঢাকায় অথবা প্রতিবেশী অন্য কোনো দেশে স্থানান্তরের অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সীমিত করায় অনেক শিক্ষার্থী দিল্লিতে গিয়ে ইউরোপের ভিসা নিতে পারছেন না। ফলে তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলাদেশের শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। ভিসা অফিস ঢাকা অথবা প্রতিবেশী অন্য কোনো দেশে স্থানান্তর হলে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয়েই উপকৃত হবে।’

বৈঠকে উপস্থিত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানান, ইতোমধ্যে বুলগেরিয়া বাংলাদেশিদের জন্য তাদের ভিসা সেন্টার ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে স্থানান্তর করেছে। তিনি অন্য দেশগুলোকেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণের আহ্বান জানান।

বৈঠকে সংখ্যালঘু ইস্যু, বাণিজ্য সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন এবং টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে উভয়ের অঙ্গীকার ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে।

এছাড়া আলোচনায় বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন কবে হবে, গণতন্ত্র, অর্থপাচার বিষয়গুলোও উঠে আসে। বিশেষ করে ফ‍্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের অগ্রগতি, জিএসপি সুবিধা নিশ্চিতকরণ ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, ‘গত ১৬ বছরের দমন-পীড়নের পর মানুষের আবেগের প্রকাশ স্পষ্ট। জোরপূর্বক গুমের করুণ কাহিনীগুলো একের পর এক সামনে আসছে। পুরো অর্থনীতিকে এমন এক অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে যে তা প্রায় ধসে পড়ার পথে।

‘ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রায় অকার্যকর অবস্থায় ছিল। আমরা একটি শ্বেতপত্র কমিটি গঠন করেছি। আগের সরকারের কাছ থেকে আমরা কী অবস্থায় দায়িত্ব নিয়েছি তা কমিটি নথিভুক্ত করেছে। অর্থনীতি, বিভিন্ন বাধ্যবাধকতা- সবকিছু এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর