বিভাগকেন্দ্রিক উন্নয়ন বৈষম্য দূরীকরণে রংপুরের জন্য আলাদা কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন একটি মতবিনিময় সভার একাধিক বক্তা।
রংপুর বিভাগের বহুমাত্রিক দারিদ্র্য, উচ্চ বেকারত্ব ও শিল্পায়নের বন্ধ্যত্ব নিরসনে করণীয় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে মঙ্গলবার রাতে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার আয়োজন করে ‘রংপুর বিভাগ বৈষম্য নিরসন আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠন।
ঢাবির স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ ড. আবদুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান সুমনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাবির উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ও শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো. ফারুক শাহ, ঢাবির ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ও ফজলুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ ড. ইলিয়াস আল মামুন, দীপ্ত টেলিভিশনের নিউজ এডিটর ও অনলাইন ইনচার্জ মাসউদ বিন আবদুর রাজ্জাক ও ব্যাংক কর্মকর্তা মেহেরুল্লাহ মিঠু।
এর বাইরে মতামত তুলে ধরেন রংপুর বিভাগ বৈষম্য নিরসন আন্দোলনের সংগঠক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবুল আলা মো. রিসালাত, মারুফ হাসান, রিপন আহমেদ, ফেরদৌস আলম, একরামুল হক, রিফাত উদ-দৌলা, সাদমান সাকিব, সিয়াম আহমেদ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
সভায় বক্তারা রংপুরের দীর্ঘদিনের বৈষম্য দূরীকরণে সরকারের উন্নয়ন বাজেটে স্থানীয় চাহিদার প্রতিফলন নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ড. মো. ফারুক শাহ বলেন, ‘উন্নয়ন বৈষম্যের পেছনে সবার দায় রয়েছে। স্থানীয় চাহিদার সঙ্গে বাজেটের সামঞ্জস্য না হলে রংপুরের মানুষ আরও পিছিয়ে পড়বে।
‘এ জন্য সরকার, রংপুরের জনগণ এবং জনপ্রতিনিধের একযোগে কাজ করা জরুরি।’
অধ্যাপক ড. ইলিয়াস আল মামুন বলেন, “‘মঙ্গা’ ও ‘মফিজ’ প্রত্যয় রংপুরবাসীর নাগরিক অনুভূতিকে আঘাত করেছে। বৈষম্য দূরীকরণে সরকারকে দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।”
সাংবাদিক মাসউদ বিন আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘রংপুর বিভাগের উন্নয়নে একটি পৃথক উন্নয়ন কমিশন গঠন করা জরুরি। আট জেলার পৌনে দুই কোটি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ড. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘রংপুরের উন্নয়নে অংশীজনদের আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।’
উন্মুক্ত মতবিনিময়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীরা অংশ নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
তারা বৈষম্য নিরসনে সুসংহত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
সভায় চারটি উপকমিটি গঠনের প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
রংপুর বিভাগে ১৩ ডিসেম্বর ও আগামী বছরের ২৪ জানুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে গোলটেবিল বৈঠক আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সঙ্গে আলোচনায় প্রাপ্ত সুপারিশের ভিত্তিতে বৈষম্য নিরসনে সমন্বিত রূপরেখা তৈরির সিদ্ধান্তও নেয়া হয়।
সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও ঢাকায় কর্মরত রংপুর বিভাগের পেশাজীবীরা অংশ নেন।