বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৮,২১,৩৪,৩০৪ টাকা

  • প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ   
  • ৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ১৮:৩৯

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো শনিবার সকালে খুলে ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। দিনভর গুনে দেখা গেছে, সেখানে জমা পড়েছে রেকর্ড আট কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। এছাড়াও পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা।

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার পাওয়া গেছে ২৯ বস্তা টাকা। তিন মাস ১৩ দিনে দানবাক্সে এবার মিলেছে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ।

শনিবার সকালে দানবাক্সগুলো খুলে গণনা শুরু হয়। দিনভর গুনে দেখা গেছে, সেখানে জমা পড়েছে আট কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। এছাড়াও পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক মিজাবে রহমত এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দানবাক্সে পাওয়া যাওয়া স্বর্ণ ও রুপার অলংকারের অংশবিশেষ। ছবি: নিউজবাংলা

এর আগে চলতি বছরের ১৭ আগস্ট মসজিদের ৯টি দানবাক্স খুলে পাওয়া গিয়েছিল ২৮ বস্তা টাকা। তখন দিনভর টাকা গণনা শেষে পাওয়া যায় সাত কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা।

ঐতিহাসিক এই মসজিদে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়াও প্রচুর পরিমাণ হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলও দান করেন অনেকে।

জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শনিবার সকাল ৭টায় দানবাক্সগুলো খোলা হয়। পরে দানবাক্সের টাকা বস্তায় ভরা হয়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বস্তা থেকে টাকাগুলো মসজিদের দ্বিতীয় তলায় মেঝেতে ঢেলে শুরু হয় গণনা। গণনা চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূইয়া বলেন, ‘টাকা গণনায় অংশ নেন পাগলা মসজিদ মাদ্রাসার ১৩০ জন ও আল-জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদ্রাসার ১৫৫ জন ছাত্র, পাগলা মসজিদের ৩৬ জন স্টাফ, রূপালী ব্যাংকের ৭৫ জন কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর ১০ জন সদস্য, ১০ জন আনসার সদস্য, ২০ জন পুলিশ, পাঁচজন র‍্যাব সদস্য এবং জেলা প্রশাসনের ২০ জন।’

তিনি জানান, এবার দানবাক্স খোলার সময় পার হয়ে যাওয়ায় একটি টিনের ট্রাঙ্ক বাড়ানো হয়েছে। মসজিদটিতে আগে নয়টি দানবাক্স থাকলেও এখন দুটি বাড়ানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, ‘পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেয়ার পাশাপাশি অসহায় এবং জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তা করা হয়।’

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, দানবাক্স খোলা থেকে শুরু করে বস্তায় ভরা এবং গণনা শেষে ব্যাংকে সব টাকা নিরাপদে পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার কাজে তিনি সশরীরে উপস্থিত থেকে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন।

মসজিদ কমিটি সূত্রে জানা যায়, ছয় তলাবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য একটি মেগা প্রকল্প করা হবে। এতে মসজিদ, মাদ্রাসাসহ অর্ধলাখ মুসল্লি যাতে একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন, এরকম আকর্ষণীয় একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। সে সঙ্গে একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীর আলাদাভাবে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে। এ প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হয়েছে । তারা যাচাই-বাছাই করে নকশা চূড়ান্ত করে দিলে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে। এতে প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা।

মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান জানান, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করছেন এই মসজিদে। মনের আশা পূরণের জন্য তারা এই দান করে থাকেন।

দানবাক্স খোলার পর থেকেই টাকা গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় জমান উৎসুক মানুষ। তাদের একজন শেখ বোরহান উদ্দিন বাজিতপুর উপজেলার বাসিন্দা।

বোরহান বলেন, ‘মানুষের মুখে আর বিভিন্ন টেলিভিশন ও পত্রিকায় পাগলা মসজিদের দানবাক্সে জমা পড়া টাকার কথা শুনি। গতবার দেখতে এসেছিলাম। এবারও নিজ চোখে দেখতে এসেছি। এত পরিমাণ টাকা একসঙ্গে কখনও দেখিনি।’

গণনায় অংশ নেয়া হেফজখানা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইমদাদুল্লাহ জানান, দানবাক্স খোলার পর থেকে গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাদ্রাসার সব শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান করেন।

এ বিভাগের আরো খবর