চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন নগরের কোতোয়ালি থানায়। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ছাড়া আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীদের ওপর হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগ ১১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেন হত্যাকাণ্ডের শিকার আইনজীবী আলিফের বড় ভাই খানে আলম।
আজ মামলাগুলোর বিষয় নিশ্চিত করে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন ও ভাই খানে আলম বাদী হয়ে নগরের কোতোয়ালি থানায় মামলা দু’টি করেছেন।’
হত্যা মামলার আসামিরা হলেন চন্দন, আমান দাস, শুভ কান্তি দাশ, বুজা, রণব, বিধান, বিকাশ, রমিত, রুমিত দাশ, নয়ন দাশ, গগন দাশ, বিশাল দাশ, ওমকার দাশ, বিশাল, রাজকাপুর, লালা, সামির, সোহেল দাশ, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, গণেশ, ওম দাশ, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, লালা, দুর্লভ দাশ ও রাজীব ভট্টাচার্য্য।
মামলার এজাহারে আলিফের বাবা অভিযোগ করেন, গত ২৬ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায় আদালত। আদেশ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে আসামিপক্ষের ইসকনপন্থি আইনজীবীরা ক্ষুব্ধ হয়ে আদালতের উদ্দেশে অশালীন ভাষায় বিভিন্ন আজেবাজে মন্তব্য করে এবং আদালতে হট্টগোল সৃষ্টি করে।
তখন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারী এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা প্রিজন ভ্যানের সামনে অবস্থান করে দায়িত্বরত পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা প্রদান করে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রিজন ভ্যানের সামনে থেকে বিক্ষুব্ধদের সরাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করলে আদালত চত্বর ত্যাগের সময় মসজিদসহ আইনজীবী ও সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করে তারা। একই দিন বিকেল সাড়ে চারটার দিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার ছেলে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ বাসায় যাওয়ার সময় তার মুখে দাঁড়ি দেখে আসামিরা তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় তারা বহিষ্কৃত ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নামে জয়ধ্বনি দেয়।
বাদী অভিযোগ করেন, স্থানীয় লোকজন ও ছেলের সহকর্মীদের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত শুনে তিনি জেনেছেন, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ইন্ধনে আসামিরা তার ছেলেকে হত্যা করে।
ছেলের দাফন-কাফন ও জানাজা নামাজ সম্পন্ন করে আত্মীয়-স্বজনের সাথে আলাপ-আলোচনা শেষে ঘটনার ভিডিও ও স্থিরচিত্র দেখে আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে থানায় গিয়ে এজাহার করতে বিলম্ব হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।