নওগাঁয় পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ শেষে রোববার রাতেই উত্তীর্ণ ৭৬ জনের নাম ঘোষণা করেন নওগাঁর পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. কুতুব উদ্দিন।
উত্তীর্ণ ৭৬ জনের মধ্যে ১২ জন নারী ও ৬৪ জন পুরুষ রয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় দুজন ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটায় একজন চাকরি পেয়েছেন। এ ছাড়া আরও ছয়জনকে অপেক্ষমাণ তালিকায় রেখে ফল ঘোষনা করা হয়।
মেডিক্যাল ও পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষে উত্তীর্ণদের যোগদান করানো হবে।
নিয়োগপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা অধিকাংশই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। এর আগের নিয়োগ পরীক্ষায় মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়েও টাকা না থাকায় চাকরি পাননি অনেকে, তবে এবার ১২০ টাকা খরচ করেই চাকরি পেয়েছেন।
চাকরি পেয়ে উচ্ছ্বসিত জুবায়ের আল মামুন বলেন, ‘আমি কৃষক পরিবারের সন্তান। সাংসারিক খরচসহ আমার পড়ালেখার জন্য মা-বাবা অনেক কষ্ট করেছেন।
‘একটা চাকরির জন্য খুব আশায় ছিলেন। কোনো ঘুষ কিংবা তদবির ছাড়াই মেধার মাধ্যমে চাকরি পেয়েছি বলে খুব খুশি।’
নতুন নিয়োগ পাওয়া কারিনা আক্তার আনন্দে কেঁদে ফেলেন।
তিনি বলেন, ‘নিজ যোগ্যতায় চাকরি পেয়ে মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি। তাদের কষ্ট সফল হয়েছে আজ। পরিবারের সবাই আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। আমি তাদের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।
‘সবাই বলে পুলিশে চাকরি পেতে অনেক টাকা ঘুষ দিতে হয়। আমার মাঝেও তেমন ধারণা ছিল, কিন্তু আমার কোনো প্রকার তদবির বা ঘুষ দিতে হয়নি। আমি দেশ ও জাতির সেবা করতে চাই।’
সদ্য চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘কোনো তদবির ছাড়াই সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি দেয়া হয়েছে। চাকরি পেতে প্রত্যেক প্রার্থীকে মাত্র ১২০ টাকা খরচ করতে হয়েছে। রাষ্ট্রের সেবায় মেধাবী ও দক্ষ পুলিশ জনবল নিশ্চিত করতে পেরে ভালো লাগছে।
‘এসব মেধাবী দ্রুত পুলিশের বিভিন্ন কৌশল ও পাঠগুলো আয়ত্ত করতে পারবে। এতে আগের চেয়ে অনেক বেশি দক্ষ পুলিশ বিভাগ গড়ে উঠবে বলে আশা করছি।’
এদিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সম্পন্ন করতে নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন, আইজিপির দুই প্রতিনিধি ও ডিআইজির দুই প্রতিনিধি সার্বক্ষণিক উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া দালাল ও প্রতারকের খপ্পরে পড়ে কেউ যাতে আর্থিক লেনদেন না করেন, সে জন্য জেলাজুড়ে প্রচার ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখা হয়।