নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সামছুল আলম খানকে হত্যার হুমকি দিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক বেলাল হোসেন সৌখিনের বিরুদ্ধে। বুধবার রাত থেকে ওই দুই নেতার কথোপকথনের এক মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
এর আগে উপজেলার গোবরচাঁপা বাজারে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ এনে ৫ নভেম্বর আওয়ামী লীগ নেতা সামছুল আলম খানসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে থানায় মামলা করেন সৌখিন। ওই মামলায় আরও ১২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছেন বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত এই নেতা। রোববার দুপুরে বদলগাছী সাংবাদিক সংস্থার কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে বেলাল হোসেন সৌখিন বলেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এডিট করা ফেক মোবাইল কল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে আমার এবং বিএনপির ইমেজ ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।’
সৌখিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিগত ২০১৩ সালে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক দুটি মামলা করে। একটি বিস্ফোরক ও আরেকটি দ্রুত বিচার আইনে। আমাকে গ্রেপ্তার করা হয় ক্লিনহার্ট অপারেশনে। সেখানে আমাকে অনেক নির্যাতন করা হয় শুধু বিএনপির রাজনীতি করার জন্য।’
বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত এই নেতা বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলম খানের সঙ্গে আমার মোবাইল ফোনে কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ এডিট করা ফেক মোবাইল রেকর্ড।’
তিনি বলেন, ‘কল রেকর্ডটি আগস্ট মাসের। প্রকৃত তথ্য এই যে, শামসুল আলম খান ইতোপূর্বে তার একটি ব্যাংক চেক গচ্ছিত রেখে আমার কাছ থেকে কিছু টাকা ধার করেন। সেটির নম্বর: ঈউ/অ- ২৮৮৫০৯২ (ডাচ বাংলা ব্যাংক)। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে এভাবে আরও অনেকের কাছ থেকেই তিনি টাকা ধার করেছেন বলে লোকমুখে জেনেছি।
‘অতি সম্প্রতি জানতে পারি যে তিনি কিছু কিছু পাওনাদারকে ধারের টাকা পরিশোধ করছেন। এ কারণে আমি তার কাছে আমার পাওনা টাকার জন্য কল করেছিলাম। এছাড়া পাওনা টাকা নেয়ার জন্য তার সামনা-সামনি হলে তিনি আমাকে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার ভয় দেখাতেন। আমি গত ২০১৪ সালের ৫ নভেম্বর আওয়ামী লীগের বিস্ফোরক মামলার বিবাদী হওয়ার কারণে আগস্ট মাসের কল রেকর্ডটি নতুন করে এডিট করে যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। বাস্তবে আগস্ট মাস থেকে এখন পর্যন্ত শামসুল আলম খানের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি।’
সৌখিন আরও বলেন, ‘পাওনা চাওয়া সংক্রান্ত কল রেকর্ডটি এডিট করে যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়। সেটি আবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশও করা হয়েছে। শুধু আমাকে এবং আমার দল বিএনপিকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্যই ফেক কল রেকর্ডটি ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
‘আমি এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং সে সঙ্গে দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে বদলগাছী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সামছুল আলম খান বলেন, ‘ঘটনার দিন নওগাঁয় আদালতে একটা কাজে গিয়েছিলাম। ওই সময় একটা অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসে। নিজেকে চাংলার সৌখিন পরিচয় দিয়ে আমার কাছে টাকা দাবি করা হয়।’