গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়া বাসটির যাত্রী আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের টানানোর খোলা তারের সঙ্গে দোতলা বাসের সংস্পর্শে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহতরা হলেন- গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির (আইইউটি) শিক্ষার্থী মোজাম্মেল হোসেন নাঈম, মোস্তাকিম রহমান মাহিন ও জোবায়ের আলম সাকিব। তারা সবাই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরীর বোর্ড বাজার এলাকায় অবস্থিত আইইউটি’র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী শনিবার সকালে ক্যাম্পাস থেকে বিআরটিসির দোতলা বাসে করে শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামে ‘মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে’র উদ্দেশে রওনা হন। পিকনিকের এই গাড়িবহরে বিআরটিসি’র ছয়টি ডাবল ডেকার ও তিনটি মাইক্রোবাস রয়েছে। তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো নিয়ে শ্রীপুরের গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের উদ্দেশে যাত্রা করেন।
উত্তর পেলাইদ গ্রামে যাওয়ার পথে বাসগুলো গ্রামীণ সড়ক ধরে উদয়খালী বাজারে পৌঁছলে বহরের একটি বাসের ছাদ উপর দিয়ে টানানো পল্লী বিদ্যুতের খোলা তারের সংস্পর্শে আসে। এর ফলে পুরো বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে। আর বাসের ৬০/৭০ জন যাত্রীর মধ্যে বেশ কয়েকজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদেরকে দ্রুত উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নেয়া হয়।
মমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মৃত অবস্থায় তিনজনকে এখানে আনা হয়। ওই ঘটনায় কতজন আহত হয়েছেন আমরা এখনও তা জানতে পারিনি।’
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বলেন, এলাকার মাটির মায়া রিসোর্টে ছয়টি বিআরটিসি দোতলা বাস এবং তিনটি মাইক্রোবাস নিয়ে পিকনিকে যাচ্ছিল। পাঁচটি বাস রিসোর্টে চলে যায়। শেষের বাসটি সড়কের পাশের ১১ হাজার ভেল্টেজের লাইনের সঙ্গে লাগলে পুরো বাস বিদ্যুতায়িত হয়। এ সময় বাস থেকে ধোঁয়া বের হতে থাকলে ছাত্ররা চিৎকার শুরু করেন। আমরা তাদের চিৎকার শুনে বাসের কাছে যাই। বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিয়ে বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ বন্ধ করতে বললে তারা বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেন। তা না হলে ভেতরে আরও ছাত্র মারা যেতেন।
ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) খন্দকার মাহমুদুল হাসান জানান, লাইনটি ১১ হাজার ভোল্টেজের। সড়কের উপর দিয়ে বিদ্যুতের লাইন ক্রস করা অবস্থায় রয়েছে। একটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে দোতলা বাসটি একটু হেলে পড়ায় বিদ্যুতায়িত হয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।