পুলিশ সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সফর রাজ হোসেন বলেছেন, পুলিশে নিয়োগে ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় না দেখার সুপারিশ করবে তার নেতৃত্বাধীন কমিশন। এক্ষেত্রে এনআইডি কার্ড হবে ভেরিফিকেশনের মানদণ্ড।
সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নিজ দফতরে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
সফর রাজ হোসেন বলেন, ‘সুপারিশ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে কিছু বিষয়ে খসড়া আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনেই পুলিশের গ্রেপ্তার ও রিমান্ড এবং ৫৪ ধারা সংশোধনের সুপারিশ করা হবে।
তিনি বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশনের পদ্ধতি ১৯২৮ সাল থেকে হয়ে আসছে। ব্রিটিশ আইনের ম্যানুয়াল অনুযায়ী এখানে কয়েক ধরনের প্রশ্ন ও তদন্ত করা হয়। এতে অনেক সময় অনেক চাকরিপ্রার্থী বাদ পড়ে যান।
দ্বিতীয়ত আরেকটি বিষয় প্রচলিত আছে- আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে কেউ রাজনীতি করে কি না এবং রাষ্ট্রবিরোধী কেউ আছে কি না। এটা ব্রিটিশদের আঙ্গিকে চিন্তা করা হতো। সম্প্রতি এমন একটি অভিযোগ এসেছে যে কারও আত্মীয়-স্বজন রাজনীতি করে কিন্তু সরকারি দল করে না, তাদের অনেকের ক্ষেত্রে এসব যুক্তি দেখে চাকরি দেয়া হয়নি।
দেখা গেছে, নিয়োগপ্রত্যাশীর খালা, ফুফা বা অন্য কেউ রাজনীতিতে জড়িত। রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পরিবারের কেউ না হলেও তারা চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা এই প্রথা বাদ দেয়ার সুপারিশ করছি।’
কমিশনের প্রধান বলেন, ব্যাংকের একজন গার্ড থেকে ক্লার্ক সবার চাকরি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় নাম-পরিচয় পরিবর্তন করে কেউ চাকরিতে ঢুকতে পারেন। পরে দেখা যেতে পারে যে তিনি কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং ভেরিফিকেশন জরুরি। যেভাবেই হোক পুলিশ ভেরিফিকেশনে যেন ভোগান্তি না হয় সে বিষয়ে সুপারিশ করেছি।
তিনি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে আইন ও বিধিবিধান পাল্টাতে হবে। কমিশন সেগুলো পরিবর্তনের সুপারিশ করবে।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, কোনো বিভাগের দুর্নীতি কমে গেলে সেখানে কর্মদক্ষতা বাড়ে। আইনের প্রতি মানুষের আনুগত্য বাড়ে। তাই পুলিশে দুর্নীতি বন্ধে নির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকবে। পুলিশের বেতন কাঠামো নিয়ে সুপারিশের লক্ষ্যেও আলোচনা চলছে।
সফর রাজ হোসেন বলেন, পুলিশসহ সরকারের সব বিভাগকে রাজনীতিমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। আমাদের গত ১৫ বছরের নিকট অতীতে দেখেছি পুলিশসহ অন্যান্য বিভাগের অনেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন। অনেকে দুর্নীতি করেছেন এবং পদোন্নতি নেয়ার চেষ্টা করেছেন। এটি বন্ধে সুপারিশের কাজ চলছে।