বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাজনীতি রুগ্ন হলে অর্থনীতিও রুগ্ন হতে বাধ্য: তারেক রহমান

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ২২:৩৩

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারের আমলে আমরা দেখেছি উন্নয়নের নামে কীভাবে মেগাপ্রজেক্ট করা হয়। এটা উন্নয়নের আসল চিত্র নয়! অর্থনীতি থেকে শুরু করে ধীরে-ধীরে সব কিছুই বেরিয়ে আসছে। অর্থাৎ একটি দেশের অর্থনীতি কিভাবে রুগ্ন হয়ে পড়ে তার বড় প্রমাণ বাংলাদেশ।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, একটি দেশের রাজনীতি যদি রুগ্ন হয়, তাহলে এর অর্থনীতিও রুগ্ন হতে বাধ্য।

রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিউশনে শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (জেটেব) তৃতীয় জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে আয়োজিত সম্মেলনে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারের আমলে আমরা দেখেছি কয়েকটি মেগাপ্রজেক্ট, উন্নয়নের নামে কীভাবে এসব মেগাপ্রজেক্ট করা হয়। এটা কিন্তু উন্নয়নের আসল চিত্র নয়! অর্থনীতি থেকে শুরু করে ধীরে-ধীরে সব কিছুই বেরিয়ে আসছে। অর্থাৎ একটি দেশের অর্থনীতি কিভাবে রুগ্ন হয়ে পড়ে তার বড় প্রমাণ বাংলাদেশ।’

বিএনপির এই দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে দুই হাজার মানুষ হত্যা এবং প্রায় ৩০ হাজার লোককে নির্মমভাবে আহত করে স্বৈরাচার পালিয়েছে। আহতদের মধ্যে কারো অঙ্গহানি হয়েছে বা কারও চোখ নষ্ট হয়েছে। কেউবা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।

‘আমি আগেও বলেছি, সংস্কার কাজ করতে গিয়ে অগ্রাধিকারের সেটিংস যদি ভুল হয় তাহলে তা জনগণের কাছে সরকারের অদক্ষতা হিসেবেই বিবেচিত হবে। দুদিন আগে আহতরা হাসপাতাল থেকে যেভাবে বের হয়ে এসেছেন, সেটা আমাদের বিবেকবান প্রতিটি মানুষের জন্যই লজ্জার।

‘স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে- আহতদের পুনর্বাসন, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা কেন অগ্রাধিকার লিস্টে নেই? থাকলেও কত নম্বরে ছিল?’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে না থাকায় মানুষ কষ্টের মধ্যে আছে। তারা দুর্বিসহ অবস্থায় জীবন-যাপন করছে। বিষয়টি অগ্রাধিকার তালিকায় কত নম্বরে আছে তা-ও স্পষ্ট নয়।’

তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচার পালানোর পর একটি বিধ্বস্ত দেশের দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। মাফিয়া সরকারের তৈরি করা জঞ্জাল তিন মাসে দূর করা সম্ভব নয়। আবার তিন মাস পর সরকারের সফলতা/ব্যর্থতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক বা অন্যায্যও নয়।

‘তবে সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা দেখতে পেলে জনগণ সহজভাবে মেনে নেবে না। জনগণের প্রতি ভ্রূক্ষেপ না করায় তারা আস্থা রাখতে চাচ্ছে, আবার চাচ্ছেও না।’

দেশ-বিদেশে ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরাচারের দোসররা এবং তাদের মাধ্যমে সুবিধাভোগীরা অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করে দেয়ার জন্য নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘জনগণের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আস্থার সম্পর্ক নিবিড় থাকলে ষড়যন্ত্রকারীরা কোনো সুযোগ পাবে না।’

বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘এই ৩১ দফা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের উন্নয়নে ঐতিহাসিক সনদ বলে আমরা মনে করি। ঘোষিত এই ৩১ দফা বাস্তবায়নে মানসম্পন্ন ও প্রায়োগিক শিক্ষার ওপরও কিন্তু জোর দেয়া হয়েছে।

‘আমরা মনে করি জনসংখ্যা কোনো অভিশাপ নয়; বরং এই জনসংখ্যাকে যদি মানবসম্পদে রূপান্তর করা যায় তাহলে দেশের উন্নয়নে এটাই বড় শক্তি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে দক্ষ শ্রমিকের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমরা যদি এই জনসংখ্যাকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারি তাহলে বিশ্ববাজারে আমাদের শ্রমশক্তির চাহিদাও বাড়বে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত না করা গেলে গণতন্ত্র নিশ্চিত করা যাবে না। আর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের প্রধান হাতিয়ার ভোট প্রয়োগ। নিরপেক্ষ স্বচ্ছ পরিবেশে ভোটের ব্যবস্থা করে সরকারের সঙ্গে জনগণের আস্থার বন্ধন দৃঢ় করতে হবে। আমরা জানি, অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। জনগণ আশা করছে, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ পরিবেশে তারা ভোট দিতে সক্ষম হবে। জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার সুযোগ পাবে। জনগণ যখন সত্যিকার অর্থে বুঝতে পারবে তাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার কাজ করছে, তখন জনগণের সঙ্গে সম্পর্কটা দৃঢ় হবে।’

দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমাদের সবার লক্ষ্য উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘জনগণের জীবনযাত্রাকে একটু ভালো করা, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যবস্থা ভালো করা, বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করা, মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা ভালো করা, নিরাপত্তা একটু ভালো করা। অতীতে যখনই জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে তখনই চেষ্টা করেছে যতটুকু সম্ভব এই কাজগুলো করার।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংস্কার কাজ করছে। আমরা তাদের সমর্থন করি। সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। আমাদের সতর্ক থেকে কাজ করতে হবে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।’

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।

এদিন প্রত্যক্ষ গোপন ভোটের মাধ্যমে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন ফখরুল আলম এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এ কে এম রুহুল আমিন আকন্দ।

জেটেব সভাপতি ফখরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবদীন ফারুক, শামসুজ্জামান দুদু ও নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর