সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করে নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে তিনি এই সরকারে বিতর্কিত কোনো ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।
সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নির্বাচনই একমাত্র পথ। অন্যান্য সরকারের দিকে না তাকিয়ে আপনাদের মতো করে দেশ পরিচালনা করুন।’
মঙ্গলবার লালমনিরহাটের বড়বাড়ী কলেজ মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তী এই সরকার যেন সংস্কারের বিষয়গুলো শেষ করতে পারে সে ব্যাপারে সহনশীলতা দেখাতে হবে। সব সমস্যা রাজনীতিতে না নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর বর্তমান সরকার এক নয়। এই সরকার এসেছে একটি সংকটময় মুহূর্তে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে। ফলে এই সরকারকে নির্বাচনের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার করতে হবে। এজন্য সরকারকে সময় দিতে হবে। একইসঙ্গে আমাদেরকে ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এমন কাউকে দায়িত্ব দেয়া যাবে না যার কারণে সরকার বিতর্কিত হয়। কারণ এই সরকারের প্রধানের দায়িত্বে আছেন বিশ্ববরেণ্য একজন মানুষ।
‘আমাদের মনে রাখতে হবে, রাষ্ট্র পুনর্গঠনে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আজ যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা যেন জাতি হাতছাড়া না করে। এই সুযোগ হাতছাড়া হলে জাতি হিসেবে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। আমি এই বিষয়টির ওপর জোর দিতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর নেতিবাচক আলোচনার কারণে ফ্যাসিবাদের দোসররা নতুন করে মাথা উঁচু করছে। জাতির সামনে যে সংকট আছে তা সমাধানের একমাত্র পথ হচ্ছে ধৈর্য্য। প্রয়োজন হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সংস্কার সম্পন্ন করা এবং একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য সব সময় ষড়যন্ত্র করেছে, অত্যাচার করেছে, নির্যাতন করেছে। এই আওয়ামী লীগ প্রায় ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রায় সাতশ’ মানুষকে গুম করেছে। তারা হাজার হাজার মানুষকে গুম-খুন করে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে, একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ‘দেশে সব জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। সেদিকে নজর দিতে হবে। বিতর্কিত কেউ যাতে উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত হতে না পারেন সেদিকেও নজর দিতে হবে। দীর্ঘ ১৭ বছরের আওয়ামী দুঃশাসন শেষে দেশের মানুষ এখন মুক্ত বাতাসের স্বাদ নিতে পারছে। শহীদ জিয়ার চেতনাকে বুকে লালন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের এগিয়ে যেতে হবে।’
জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়াল, জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।