দেশে বিদ্যমান সংবিধানের অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরে সেগুলো সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের বক্তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার আর্টস অডিটোরিয়ামে শনিবার বিকেলে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সংবিধান ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তারা এ মত দেন।
জনস্তরে সংবিধান চিন্তার প্রসারে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন (বিআইআরই) এ আলোচনা সিরিজের আয়োজন করে, যার প্রথম পর্ব হয় গতকাল।
আলোচনায় বক্তাদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. মনযুর রাব্বি বলেন, রিপাবলিকের বাংলা অনুবাদ প্রজাতন্ত্র ঠিক নয়। সংবিধানে প্রজা কথাটি থাকায় তা ‘রাজা’র জন্ম দিয়েছে।
তিনি এ ধরনের শব্দ পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে দারুণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে জনগণের বিভিন্ন অংশ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য দরকার।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, সংবিধানের ১৮টি মৌলিক অধিকারের মধ্যে ১৫টিই শর্তসাপেক্ষ (কনডিশনাল)। ফলত এক হাতে অধিকার দিয়ে অন্য হাতে কেড়ে নেয়া হয়েছে।
তিনি এ ধরনের শর্তারোপের বিরোধিতা করে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এটি সঞ্চালনা করেন মেহেরবা সাবরিন।
স্বাগত বক্তব্যে মো. জহির উদদীন সোহাগ কেন জনস্তরে সংবিধান চিন্তা প্রয়োজন, কীভাবে তা সম্ভব, সে বিষয়টি তুলে ধরেন।
পরে সংবিধান নিয়ে জনমত জরিপের প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
জরিপের ফল প্রকাশ করে ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক সাঈদ সারওয়ার জানান, অধিকাংশ অংশগ্রহণকারী চান নতুন সংবিধান। প্রায় সবাই চান এ সংবিধানের সংস্কার।
ব্যতিক্রমী এ আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে অংশগ্রহণকারীরা সংবিধান নিয়ে তাদের মতামত দেন। তাদের অনেকে সংবিধান পুনর্লিখনের কথা বলেন। কেউ কেউ সংস্কারের পরামর্শ দেন।
অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য শেষে তিন বক্তা সংবিধান সংস্কার নাকি পুনর্লিখন দরকার, সে বিষয়ে তাদের মত দেন।