বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বল্প সময়ের জন্যও বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের স্থান নেই: ড. ইউনূস

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১৯:০৬

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় না হওয়া পর্যন্ত ভারতে পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া শুরু করবে না বাংলাদেশ। রায় প্রকাশ হলে আমরা ভারতের সঙ্গে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।’

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আপাতত দেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের কোনো স্থান নেই। দলটি ফ্যাসিবাদের সব বৈশিষ্ট্যই প্রদর্শন করেছে।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় না হওয়া পর্যন্ত ভারতে পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া শুরু করবে না বাংলাদেশ।’

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘স্বল্প সময়ের জন্যও নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশে তার কোনো স্থান নেই, আওয়ামী লীগের কোনো জায়গা নেই।’

ক্ষমতাচ্যুত রাজনৈতিক দলটির নেয়া বিভিন্ন কৌশলের সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল, তারা (রাজনৈতিক) ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল, তারা তাদের স্বার্থে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল।’

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে নির্বাচনে কারচুপি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগের মুখে পড়েছে আওয়ামী লীগ।

শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশে দলটিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হবে, সংস্কারের আদেশ দেয়া হবে নাকি রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা থেকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হবে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

আওয়ামী লীগ ভেঙে যেতে পারে বলেও ধারণা করছেন প্রধান উপদেষ্টা। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, দলের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিশেষাধিকার হবে। কারণ তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘রাজনৈতিক সরকার’ নয়।

ড. ইউনূস বলেন, “আওয়ামী লীগ ভবিষ্যতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘ঐকমত্যের’ ওপর। তাদের রাজনৈতিক অবস্থান ঠিক করতে হবে।”

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংকে অনুসরণীয় কাজের জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূস সুপরিচিত। স্বঘোষিত ‘গরিবের ব্যাংকার’ হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক ইউনূস এর আগে হাসিনার প্রশাসনের লক্ষ্যবস্তু হয়েছিলেন।

ছাত্রনেতাদের নিয়ে গঠিত তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করছে এবং পুলিশ, বিচার বিভাগ ও জনপ্রশাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের জন্য ১০টি কমিশন গঠন করেছে।

রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনের প্রস্তুতিতে সম্পৃক্ত করার আগে রাজনৈতিক দল গঠন বা রাজনীতিতে যোগ দেয়ার তার কোনো ইচ্ছা নেই বলেও জানান তিনি।

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর তার (শেখ হাসিনা সরকার) প্রধান সমর্থক ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা দিয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, তার সরকার শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার হস্তান্তর চাইবে। তবে তারা ট্রাইব্যুনালের রায়ের জন্য অপেক্ষা করবেন।

তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। রায় প্রকাশ হলে আমরা ভারতের সঙ্গে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।’

রায় ঘোষণার আগে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার কোনো কারণ আছে বলে প্রধান উপদেষ্টা মনে করেন না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার জন্য তার মায়ের দায়বদ্ধতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেছিলেন, ‘তিনি বেআইনি কিছু করেননি। যেকোনো অভিযোগের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আছেন।’

হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তার অনেক সমর্থক প্রতিশোধমূলক সহিংসতার আশঙ্কায় আত্মগোপনে চলে যায়।

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসও তার সরকারের ওপর ভারতের উষ্ণ সমর্থনের প্রভাবের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘বিদ্যুৎ, পানি ও অবকাঠামো প্রকল্পের মাধ্যমে দুই দেশ নিবিড়ভাবে সংযুক্ত এবং তাদের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।’

তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি...। আমরা প্রতিবেশী। আমাদের একে অপরকে প্রয়োজন। আমাদের অবশ্যই সর্বোত্তম সম্পর্ক থাকতে হবে, যা যেকোনো দুই প্রতিবেশীর হওয়া উচিত।’

এ বিভাগের আরো খবর