বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি হত্যা মামলা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ ইমাম ও শহীদ সায়েমের পরিবারের সদস্যরা বুধবার সকালে ট্রাইব্যুনালে যাবতীয় তথ্য-প্রমাণসহ এসে অভিযোগ দাখিল করেন। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের অনুমোদন সাপেক্ষে মামলা দু’টি দায়ের করা হয়।
একটি মামলায় বলা হয়েছে, ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে যাত্রাবাড়ীর মেয়র মোহম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার সংলগ্ন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন সায়েম হোসেন। এ ঘটনায় বুধবার সকালে শেখ হাসিনাসহ ৮৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করেন নিহতের মা শিউলি হোসেন।
অপর মামলায় বলা হয়েছে, ২০ জুলাই রাজধানীর কাজলা ফুটওভার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় মো. ইমাম হোসেন তামিম ভুঁইয়া গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনায় তার মা পারভীন আক্তার বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৭০টির বেশি অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের কাছে এসেছে। প্রতিদিনই অভিযোগ আসছে। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা বরাবরও অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে।’
এর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন থানায় জুলাই-আগস্ট গণহত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে দায়ের হওয়া সব মামলা যেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলে আসে সেজন্য স্বল্প সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন থানায় করা এসব মামলায় প্রকৃত দোষীদের বাদ দেয়া হলে বা অহেতুক কাউকে সম্পৃক্ত করা হলে তা খতিয়ে দেখা হবে। আমরা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর।’
গণমাধ্যমের সহায়তা কামনা করে তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হবে। জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নির্মূলে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিভিন্ন বাহিনী ও ক্যাডারদের হাতে হত্যা, গণহত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের শিকার ভিকটিম ও তাদের স্বজনরা ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা বরাবরই অভিযোগ করবেন। এখানে অভিযোগ করতে কোথাও কোনো টাকা-পয়সা খরচ করতে হবে না।’
‘ভিকটিমগণ নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা করলে সে ক্ষেত্রে তার আইনি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এক্ষেত্রে সাক্ষী সুরক্ষা বিধানও রয়েছে।’