রোহিঙ্গা সংকট প্রলম্বিত হওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ অন্যদিকে সরে যাওয়ায় এ জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক সহায়তা কমেছে।
তাদের জন্য পরিচালিত কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে আর্থিক সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ।
রাজধানীর একটি হোটেলে রোববার অনুষ্ঠিত গোলটেবিল আলোচনায় শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এ তথ্য জানান।
অরবিস ইন্টারন্যাশনাল ও দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস আয়োজিত ‘মানবিক পরিস্থিতে চক্ষুসেবার সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি: পাঠ ও সেরা অনুশীলন’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দেখাশোনা করা কেবল বাংলাদেশের দায়িত্ব নয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছি। আমরা তাদের পক্ষে কাজ করছি, কিন্তু এখন তারা আমাদের ভুলে যাচ্ছে।’
মিজানুর বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১৬০ থেকে কমে এখন ১২০-এ দাঁড়িয়েছে এবং আর্থিক সংকটের কারণে বর্তমানে চালু স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোও তাদের সেবা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করছে, এমন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও আর্থিক সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হচ্ছে।’
অপথালমোলজিক্যাল সোসাইটি অফ বাংলাদেশের (ওএসবি) প্রেসিডেন্ট এবং ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর দ্য প্রিভেনশন অফ ব্লাইন্ডনেস (আইএপিবি) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের কান্ট্রি চেয়ার অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
তিনি বলেন, চোখের যত্ন এখন আর কেবল স্বাস্থ্য সমস্যা নয়, এটি উন্নয়ন সমস্যা।
এ অধ্যাপক রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চোখের যত্নকে অগ্রাধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব তুলে ধরেন।
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, জুলাই আন্দোলনে যাদের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের জন্য বাংলাদেশ নেপাল থেকে কর্নিয়া আনছে।
স্বাগত বক্তব্যে দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বলেন, ‘স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোকে গণমাধ্যমের সহযোগিতায় চক্ষু স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে।’
চোখের যত্ন সম্পর্কে সচেতনতার অভাবের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি পাঠ্যপুস্তকে চোখের যত্নবিষয়ক পাঠ অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. মুনির আহমেদ ধন্যবাদ জ্ঞাপনের সময় বলেন, বক্তারা যে সুপারিশ ও পরামর্শ দিয়েছেন তা তার প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য অংশীজনকে আগামী দিনে ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে।