নাটোর-২ আসনের সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের ভাতিজা রাশেদুল ইসলাম কোয়েলকে ১০ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
এদিকে কোয়েলকে আদালতে হাজির করায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনা সদস্যরা আদালত প্রাঙ্গণে কয়েক স্তরে নিরাপত্তা জোরদার করেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে কোয়েলকে আদালতে হাজির করার পর তাকে ১০টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠান অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রওশন আলম। কোয়েলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা রিমান্ড আবেদন করলে পরবর্তী তারিখে রিমান্ড শুনানির কথা জানায় আদালত।
আদালত সুত্রে জানা যায়, গত ১১ অক্টোবর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় বিজিবির হাতে গ্রেপ্তার হন নাটোর সদরের চকবৈদ্যনাথ এলাকার আমিনুল ইসলামের ছেলে রাশেদুল ইসলাম কোয়েল। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর থেকে নাটোরে ১০টি মামলায় আসামি করা হয় কোয়েলকে।
এদিকে কোয়েলকে আদালতে হাজির করা নিয়ে সকাল থেকেই আদালত পাড়ায় ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করতে দেখা যায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনা সদস্যদের। বিএনপি এবং এর সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জেলা প্রশাসনের কার্যালয়সহ আদালের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান নিয়ে কোয়েল ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
সদর থানার ওসি মাহবুর রহমান জানান, আদালতে প্রাঙ্গণে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান তিনি।
দুপুর ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে বিএনপি নেতাকর্মীদের নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন জেলা যুবদলের সভাপতি এম হাই তালুকদার ডালিম।
নেতাকর্মীদের শান্ত করে এ সময় তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কুখ্যাত সন্ত্রাসী কোয়েল, যার হাতে নাটোর শহর বার বার রক্তাক্ত হয়েছে। তাকে কোর্টে নিয়ে আসার কথা শুনেছি, এটা আইনি প্রক্রিয়া। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
‘১৭ বছর পর ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর দেশের মানুষ আইন ফিরে পেয়েছে। সেই আইনে প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা কোর্ট প্রাঙ্গণ ত্যাগ করছি। আমাদের সিনিয়রদের নির্দেশে আমরা কোর্ট প্রাঙ্গণ ত্যাগ করছি। এদের নায্য বিচার যেন আইন করে, সেই অপেক্ষায় রয়েছে নাটোরবাসী।’
দুপুর ১টার দিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনা সদস্যদের ব্যাপক প্রটোকলের মধ্যে আদালতে হাজির করা হয় আসামি রাশেদুল ইসলাম কোয়েলকে। গাড়ি থেকে নামিয়ে আদালতে তোলার সময় নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে ডিম ও মল ছোড়া হয় কোয়েলের মুখে। এ সময় বিএনপির নেতাকমীরা কোয়েলের ওপর হামলার চেষ্টা করলে সেনা সদস্যদের বাধায় কোর্টের সামনে তারা স্লোগান দিতে থাকে। এরপর আদালতে হাজিরা শেষে কঠোর নিরাপত্তায় কোয়েলকে জেলহাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।