বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেসব অনিয়ম ও ব্যত্যয় ঘটেছে সেগুলো নির্বাচন কমিশন সংস্কার বিষয়ক কমিটি চিহ্নিত করবে। এসব নির্বাচনে ভালো কিছু হয়ে থাকলে সেগুলোও চিহ্নিত করা হবে।
নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটির প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার সোমবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। এ সময় তিনি কমিশনের অন্যান্য কার্যক্রমও তুলে ধরেন।
বদিউল আলম বলেন, ‘নির্বাচনি প্রক্রিয়াটা একদিনের বিষয় নয়। এটি একটি সাইকেল। এই সাইকেল পর্যালোচনা করে ব্যত্যয় যা ঘটেছে তা চিহ্নিত করে আমরা সুপারিশ করব।’
নির্বাচনে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হবে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের সুপারিশ থাকবে। তবে সে কথা বলার সময় এখনও আসেনি। আমরা কর্মকর্তা এবং কমিশনের বিষয়ও পর্যালোচনা করব।’
বদিউল আলম বলেন, ‘কমিটি নির্বাচনি আইন-কানুন ও বিধিমালা পর্যালোচনা করছে। একটি ওয়েবসাইট তৈরি করছি। এতে কী থাকা উচিত তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের ফেসবুক পেজ হবে, ই-মেইল ঠিকানাও হবে।
‘সবার কাছ থেকে তথ্য, প্রস্তাব, সুপারিশ- এগুলো আমরা চাইব। ওয়েবসাইটটি ইসির ওয়েবসাইটের সাব-ডোমেইন হবে। এক সপ্তাহের মধ্যেই এসব হয়ে যাবে।’
ওয়েবসাইটে কী বিষয়ে মতামত চাওয়া হবে, সংবিধান সংস্কার নিয়ে কী আলোচনা করা হয়েছে- এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা লাইন ধরে ধরে পর্যালোচনা করছি। সুনির্দিষ্ট কোনো কিছু নয়। যেদিন আমরা সুপারিশ সরকারের কাছে পাঠাব, সেদিন এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে।’
নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটির প্রধান বলেন, ‘সবচেয়ে বড় আইন হলো গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)। আরপিও আমরা গভীরভাবে পর্যালোচনা করছি। জাতীয় নির্বাচনের জন্য এটা মাদার অব ল।
‘এরপর সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইন আছে, ভোটার তালিকা আইন আছে, ইসি সচিবালয় আইন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন আছে। এগুলো পর্যালোচনা করতে হবে। পর্যালোচনা করে সে বিষয়ে সুপারিশ করতে হবে। কমিশনের নিয়োগের আইন অগ্রাধিকার। সরকার যখন চাইবে আশা করি তখনই আমরা তাদের (উপদেষ্টা) একটা খসড়া দিতে পারব।’
‘না’ ভোট রাখার বিধানের বিষয়টি নজরে আনলে তিনি বলেন, ‘আমরা সবকিছুই বিবেচনায় নেব। যত মতামত আসবে পর্যালোচনা করব। নির্বাচন বিষয়ে যে কেউ যে কোনো মতামত দিতে পারবেন। উন্মুক্ত মতামত নেয়া হবে।’
বদিউল আলম আরও বলেন, ‘আমরা তো নিশ্চিত করতে পারব না যে কেউ অপকর্ম করবে না। তবে আমরা গাইডলাইন তৈরি করব। সিঁড়ির পাশ দিয়ে যেমন ব্যারিয়ার থাকে। কেউ যেন পড়ে না যায়। কেউ যদি ঝাঁপ দিতে চায় তাহলে তো কিছু করার নেই। কিন্তু আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করব এমন সব সুপারিশ করার, যেন একটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত হয়।’