রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিটি প্রস্তাবনা দেয়ার আগেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পাশাপাশি দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই নির্ধারিত হবে আগামী জাতীয় নির্বাচনের তারিখ।
সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতিসংঘ সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রেস সচিব বলেন, রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রমের জন্য ছয়টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এসব কমিটি কাজও শুরু করেছে। আগামী ১ অক্টোবর থেকে এসব কমিটির কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হওয়ার কথা ছিল।
‘কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মনে করছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আগেই আলোচনায় বসা দরকার। কারণ রাজনৈতিক দলগুলো রাষ্ট্রের স্টেকহোল্ডার। আলোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কারে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ১৬ মাস না ১৮ মাস, ১২ মাস না ছয় মাস- এটা আসলে সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশের জনগণ। কমিশনের রিপোর্ট, কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে পলিটিক্যাল কনসালটেশন এবং এই কনসালটেশনের পর জনগণ, বাংলাদেশের সোসাইটি, বাংলাদেশের সব স্টেকহোল্ডার যখন ডিসাইড করবে যে, আমরা এই এই বিষয়ে একটি ঐকমত্যে পৌঁছেছি তখন ইলেকশনের একটি সমাধান হবে। এটা কবে হবে তা এখনই নির্ধারণ করা যাচ্ছে না।
‘আর আমার মনে হয় যে সেনাপ্রধান এখানে অপিনিয়ন দিয়েছিলেন। আলোচনাটা খুব দ্রুত হবে এটুকু আমি বলতে পারি। আলোচনাটা হওয়ার পরই দেখবেন কমিশনের কাজ শুরু হচ্ছে।’
বিশ্বনেতারা নির্বাচনের টাইম ফ্রেম জানতে চাননি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং জনগণসহ সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা ও মতামত নিয়েই নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা হবে।’
তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বনেতাদের পাশাপাশি আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থা অন্তর্বর্তী সরকারকে আর্থিক সমর্থন দিয়েছে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে শফিকুল আলম বলেন, ‘সংস্কার কমিশনের কাজ দ্রুত শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা পেছানো হয়েছে। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে আলোচনা শুরু হবে। আলোচনা শেষে দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে সংস্কার কমিশন কাজ শুরু করবে।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আসন্ন আলোচনায় আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নেবে।’
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্বাচনে অংশগ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, ‘তিনি এক কথার মানুষ। তিনি সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। তিনি রাষ্ট্র মেরামতের এ সুযোগকে মহৎ একটি কাজ হিসেবে বিবেচনা করছেন এবং এটিকে তিনি সফল জায়গায় নিয়ে যেতে চান।’