সরকার ৪০ লাখ শ্রমিককে টিসিবির ন্যায্যমূল্যের পণ্য দেবে। আগামী ১ অক্টোবর থেকে শ্রমঘন এলাকায় এই কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
রোববার সচিবালয়ে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে গ্রামীণফোনের চেক গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের যে ব্যবস্থাগুলো আছে সেগুলো সচল করতে পারলে দেশের অধিকাংশ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এমনকি নতুন কিছু না করলেও।’
তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে শ্রমিকদের যে ১৮ দফা দাবি ছিল তা মালিক ও শ্রমিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সমাধানের চেষ্টা করেছি। যে দাবিগুলো মেনে নেয়া হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।
‘আগামী ১ অক্টোবর থেকে শ্রমঘন এলাকায় টিসিবির কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে। সেখান থেকে শ্রমিকরা ন্যায্যমূল্যে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারবেন।’
শ্রম সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের জন্য সুখবর দিতে চাই। তাদের ১৮ দফার মধ্যে একটি বিশেষ দফা ছিল রেশন। সেটা নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি।
‘আজ আমরা মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী ১ অক্টোবর আশুলিয়ায় টিসিবির পণ্য শ্রমিকদের বিতরণের জন্য উদ্বোধন করবো। টিসিবির আওতা এক কোটি পরিবারের বাইরে অতিরিক্ত হিসেবে শ্রমঘন এলাকায় আমরা বাড়াবো।
‘উপদেষ্টা উপস্থিত হয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। আমরা ৪০ লাখ শ্রমিককে পর্যায়ক্রমে টিসিবির ন্যায্য মূল্যের পণ্য দেব।’
আসিফ মাহমুদ বলেন, মূলত শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠিত হয়। কিন্তু আমাদের অধিকাংশ শ্রমিকই জানেন না যে তাদের জন্য এমন একটি ফান্ড রয়েছে। কীভাবে আবেদন করতে হবে হয়তো সেই প্রক্রিয়াটাও তাদের জানা নেই।
‘এই ফান্ড ব্যবস্থাপনা নিয়ে অস্বচ্ছতা এবং অনেক প্রশ্নও ছিল। শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের অর্থ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কোনো সমস্যা থাকলে সেগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ২৮৫ জন শ্রমিককে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের তহবিল থেকে ১৪১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে। এখন তহবিলে জমা আছে এক হাজার ২৬ কোটি টাকা।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা শ্রমিকদেরই অর্থ। কোম্পানিগুলো এখানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এটা আমাদের কাছে আমানত হিসেবে রাখে। আমরা সেটা সঠিকভাবে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।
‘এই তথ্যগুলো যে কোম্পানিগুলো অংশগ্রহণ করে তারাও যাতে দেখতে পারেন, একইসঙ্গে শ্রমিকরা আবেদন করলে যাতে তারা ফলোআপটা রাখতে পারেন তার আবেদনটা কোন অবস্থায় আছে, সেজন্য এটাকে আমরা সম্পূর্ণভাবে ডিজিটালাইজ করার পরিকল্পনা নিয়েছি। ডিজিটাল পদ্ধতিতে আমরা এটা বিতরণ করব।’
যেখানে শ্রমিকরা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত সেখানে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা।
দু-একটি জায়গায় এখনও শ্রমিক অসন্তোষ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছি।’