টানা চার দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নীলফামারীতে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়ালেও কমতে শুরু করেছে। রোববার বিকেল ৩টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়ার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, রোববার ভোর ৬টার দিকে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে সকাল ৯টায় পানি কমে বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় তিন সেন্টিমিটার ও বিকেল ৩টায় পাঁচ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তিস্তা বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে রাত ১২টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এই পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানির বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার।
স্থানীয়রা জানান, পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, গয়াবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তা নদীবেষ্টিত ১৫টি চর গ্রামের চার হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। পানি কমায় ধীরে ধীরে বসতবাড়ি থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান বলেন, ‘কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে গতকাল শনিবার তিস্তা নদীর পানি বাড়ে। তা আজ রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এতে আমার ইউনিয়নের পূর্ব ছাতনাই ও ঝাড়সিংহেরস্বর মৌজার প্রায় এক হাজার ২০০ পরিবার পানিবন্দি হয়েছে পড়েছে।’
খালিশাচাপানী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘দুদিন ধরে তিস্তায় পানি বাড়ছে। আজ সকাল পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তিস্তাপাড়ে বসবাসরত পরিবারগুলো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। পূর্ব ও পশ্চিম বাইশপুকুর গ্রামে দেড় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।’
ডালিয়া পানি উন্নয়ন উপ-বিভাগ-২ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রীতম কুমার সরকার বলেন, ‘আজ রোববার সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার দুই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সকাল ৯টায় বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
‘পূর্বাভাস অনুযায়ী বর্তমানে পানি বাড়ার আশঙ্কা নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিস্তা ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দেয়া হয়েছে।’